রিয়াদ ইসলাম: ঈশ্বরদীর রূপপুরে নির্মাণ করা হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয় করে সঞ্চালন লাইন নির্মাণের বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসসহ নানা কারণে এ প্রকল্পের গতি ধীর হয়েছিলো।
জানা গেছে, রূপপুরের জন্য পিজিসিবির এ সঞ্চালন লাইন নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৯৮১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। তবে এখনো সঞ্চালন লাইনে গতি এলেও প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ কাজ নদী পারাপারের (রিভার ক্রসিং) অংশ এখনো শুরু হয়নি। পিজিসিবির ওয়েবসাইটে দেয়া প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে সংযুক্ত সঞ্চালন লাইনটি মোট ৬৬৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৪৬৪ কিলোমিটার ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন ও ২৩০ কেভি ২০৫ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন। দীর্ঘ এ সঞ্চালন লাইনে মোট ২০ কিলোমিটার রিভার ক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে ৪০০ কেভিতে ১৩ কিলোমিটার ও ২৩০ কেভিতে সাত কিলোমিটার রিভার ক্রসিং।
তবে পিজিসিবির ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, প্রকল্পের সঞ্চালন লাইন কিলোমিটার হিসেবে ঠিক থাকলেও নদী পারাপার রয়েছে ১৬ কিলোমিটার।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, রূপপুরের সঙ্গে সংযুক্ত সঞ্চালন লাইনে কয়েক ধাপে কাজ চলছে। এ কাজ চলতি বছরেই শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সেভাবেই এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। রূপপুর সঞ্চালন লাইনের কাজ আগামী ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হওয়ার সময়সীমা নির্ধারিত রয়েছে।
রূপপুর সঞ্চালন লাইনের কাজ পায় ভারত এবং একটি অংশের কাজ পায় রাশিয়া। ২০১৮ সালের এপ্রিলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) এ প্রকল্প অনুমোদন দেয়। তারা আরো বলেন, নদী পারাপারের কাজ শেষ হতে আরো দুই বছর লাগলে ২০২৫ সালের মাঝামাঝি এ কাজ শেষ হবে।
পিজিসিবির প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক কিউএম শফিকুল ইসলাম বলেন, রূপপুরের জন্য নির্মাণাধীন সঞ্চালন লাইন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ করার লক্ষ্য পিজিসিবির। কাজ চলতি বছরেই শেষ হবে বলে আশা করছি।
পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘রিভার ক্রসিং কাজের জন্য ঠিকাদারদের টাকা দিতে হবে। বিদেশী ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করতে হবে ডলারে। কিন্তু এ প্রকল্পে যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন সে পরিমাণ ডলার দিতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলার ছাড়ের ওপর নির্ভর করছে এ প্রকল্পের কাজ। যত দ্রæত ডলার ছাড় হবে, তত দ্রæতই এ কাজ এগিয়ে নেয়া যাবে। তবে ঠিক কত সময় লাগবে তা এ মুহূর্তে বলা কঠিন।
প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতি বিষয়ে জানা গেছে, গত মাসের শেষ পর্যন্ত এ প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৫৬ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগামী ডিসেম্বরে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা জানিয়েছে পিজিসিবি।
চলতি বছরে প্রথম ইউনিট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোলেও এ প্রকল্প উৎপাদনে যেতে আরো এক বছর অর্থাৎ ২০২৪ সাল এবং দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৫ সালে উৎপাদনে যাওযার কথা রয়েছে। সে অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।