বিশ্বজিৎ দত্ত : বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংকট, ডলারের অভাব, ব্যাংক ঋণের ঘাটতি, স্থানীয় গার্মেন্টে সুতা বিক্রি না হওয়া ও চোরাই কাপড়ের কারণে দেশের টেক্সটাইল খাত সংকটে পড়েছে বলে দাবি করেছে টেক্সটাইল শিল্প মালিকরা। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন এই দাবি করেন।
তিনি বলেন, সরকার নিশ্চয়তা দিয়েছিল গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের। কিন্তু গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে তাদের টেক্সটাইল মিলগুলো বর্তমানে অর্ধেক উৎপাদন করছে। কিছুক্ষণ পরপর বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় স্পিনিং মিলগুলো বিপুল লোকসানের মুখে পরেছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গ্যাসের মূল্য ৬১৭ বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিকিউবিক গ্যাসের মূল্য মিল মালিকরা পরিশোধ করছে ৩০ টাকা। কিন্তু গ্যাস ও বিদ্যুতের কোন উন্নতি হয়নি। এখন মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি টেক্সটাইল মিলগুলোকে গ্যাসলাইনের জন্য অতিরিক্ত জমানত দাবি করছে গ্যাস কোম্পানিগুলো। যা তাদের পক্ষে এখন দেয়া সম্ভব নয়। খোকন বলেন, ২০২৩ সালে শুধুমাত্র গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণেই প্রতি কেজি সুতার মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৩.১০ ডলার। এই সংকটে গত ১৫ মাসে ৪৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে স্পিনিং মিলগুলোর।
খোকন বলেন, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল থেকে সূতা আমদানির জন্য প্রতিটি মিলের জন্য আগে ৩০ মিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদান করা হতো। এখন এটি কমিয়ে ২০ মিলিয়ন করা হয়েছে। তার উপর তুলা আমদানি করতে ব্যাংকগুলোতে এখন ডলার পাওয়া যাচ্ছেনা। এই সমস্যা সমাধানে সরকারের হস্তক্ষেপ চান মিল মালিকরা। এরবাইরে আগের ব্যাংকঋণ যেসব ছিল সেগুলোকে বøক একাউন্টে ২০২৪ পর্যন্ত রেখে দেয়ার প্রস্তাব করেনতারা।
মিল মালিকরা বলেন, গার্মেন্ট শিল্পের কটন সুতায় বাংলাদেশ স্বয়ংস্পূর্ণ।দেশের টেক্সটাইল মিলগুলোই তা সরবরাহ করতে পারে। কিন্তু গার্মেন্ট মালিকরা বিদেশ থেকে সুতা আমদানি করেছে। তাতেও দেশের টেক্সটাইল শিল্প ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ব্যাগেজের মাধ্যমে আনা পাকিস্তানি কাপড়ের আধিপত্যের কারণে দেশের কাপড় বিক্রি কমে যাচ্ছে। গত ২ বছরেও এইসব অবৈধ কাপড় বিক্রিতে সরকারের কোন সংস্থাই কোন অভিযান পরিচালনা করেনি। সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, সব কিছু মিলিয়ে ২ বিলিয়ন ডলারের টেক্সটাইল শিল্প ৫০০ মিলিয়নে নেমে এসেছে।