আনু মুহম্মদ
এবারের বাজেটে করের জাল স¤প্রসারণ ঘটানোর ফলে জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় আরও বাড়বে। কিছুদিন আগেও গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে, সামনে আরও দামবৃদ্ধির প্রস্তুতি চলছে। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে জাতীয় সক্ষমতা বিকাশে বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। বিদ্যুৎ খাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে তার সিংহভাগ কতিপয় গোষ্ঠীর মুনাফা নিশ্চিত করার লক্ষে নির্ধারিত। প্রাথমিক শিক্ষাসহ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ আগের ধারাবাহিকতায় জিডিপির শতকরা দুই ভাগের মধ্যে আটকে আছে। শিক্ষাকে জনগণের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সে অনুযায়ী বাজেট পুনর্বিন্যাসের কোনো লক্ষণ এই বাজেটেও নেই। শিক্ষাখাতে ব্যয়ের আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সীমা হচ্ছে জিডিপির ন্যুনতম ৬ শতাংশ। বাংলাদেশ এখনো তার তিন ভাগের এক ভাগ ব্যয় করছে। এর ফলে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই, শিক্ষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই, বেশির ভাগ স্কুলেই ল্যাবরেটরি, লাইব্রেরি নেই, শিক্ষক নেই। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে শিক্ষাখাতে ব্যয় অনুপাত সর্বনি¤œ। এই কারণে শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্যের স¤প্রসারণ ঘটছে। কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট টিউশনি, গাইড বইয়ের বাণিজ্য গ্রাস করছে শিক্ষাখাতকে।
স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দের ক্ষেত্রেও একই দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়। স্বাস্থ্যখাতে নি¤œমানের বরাদ্দ দিয়ে পাবলিক বা সর্বজন স্বাস্থ্য অবকাঠামো দুর্বল রাখা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাণিজ্যিক ব্যয়বহুল চিকিৎসা স¤প্রসারণের পথ তৈরি হয়েছে। কৃষি ও পাট বাংলাদেশের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শক্তি ধারণ করে। এই দুটি ক্ষেত্রেই বরাবর বরাদ্দ অনেক কম। লেখক: অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক