সোহেল রহমান : স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) থেকে বের হওয়ার পরবর্তী ছয় বছর বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধার আওতায় রাখতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীদের সমর্থন চেয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি।
উল্লেখ্য, লন্ডনের মার্লবোরো হাউসে ৫-৬ জুন অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ বাণিজ্যমন্ত্রীদের সভায় যোগ দিতে বাণিজ্যমন্ত্রী বর্তমানে লন্ডন অবস্থান করছেন। আগামী বছরের শুরুতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ১৩তম মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে বাংলাদেশকে দেয়া এই সুবিধা অব্যাহত রাখতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের সমর্থন চেয়েছেন তিনি। বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনুষ্ঠিত সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, মহামারী কোভিড-১৯ এবং তার পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ লাভ করেছে। এই সঙ্কটময়কালে সদ্য এলডিসি থেকে উত্তরণপ্রাপ্ত দেশসমূহ অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধার বাহিরে গেলে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। তাই উত্তরণ পর্যায়ে থাকা স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে অন্তত ছয় বছর অগ্রাধিকারমূলক বাজারের প্রবেশ সুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে।
বাংলাদেশ গত বছরগুলোতে কমনওয়েলথের বাণিজ্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কমনওয়েলথের বিজনেস-টু-বিজনেস কানেক্টিভিটি ক্লাস্টার লিড কান্ট্রি হিসাবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। এছাড়া ২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের আন্তঃ-কমনওয়েলথ বাণিজ্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করছি। অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই বাণিজ্যের উপর গুরুত্বারোপ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। বৈশ্বিক অর্থনীতির বর্তমান সমস্যা এবং চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের উপায় এবং কোভিড-পরবর্তী পুনরুদ্ধার ও উদ্ভূত বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং স্থিতিশীল অর্থনীতি গড়ে তোলার উপর বিশেষ নজর দিতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেডের সুবিধার্থে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি অনুমোদনকারী প্রথম এশিয়ান দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে একটি কাগজবিহীন বাণিজ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকার জাতীয় রোডম্যাপ তৈরি করছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় অংশ নেয়া কমনওয়েলথ মন্ত্রীরা জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশেষ করে উন্নয়নশীল, স্বল্পোন্নত দেশ এবং ক্ষুদ্র ও দুর্বল অর্থনীতিতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অবদান রাখে তা নিশ্চিত করার জন্য বর্ধিত সহযোগিতা এবং শক্তিশালী অংশীদারিত্বের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। কমনওয়েলথ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ গভীর করার জন্য তাদের প্রতিশ্রæতি ব্যক্ত করে কমনওয়েলথ মন্ত্রীরা ২০৩০ সালের মধ্যে আন্তঃকমনওয়েলথ বাণিজ্য দুই ট্রিলিয়ন-এ উন্নীত করার জন্য আরও উচ্চাকাঙ্খী পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন।