বিদেশে ভ্রমণকারী বাংলাদেশিরা মার্চে কার্ডে ব্যয় ৪২৬ কোটি টাকা
মো. আখতারুজ্জামান : বাংলাদেশিরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করতে গিয়ে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে মার্চ মাসে ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা দেশি মুদ্রায় ৪২৬ কোটি টাকা। এই ব্যয় আগের মাস ফেব্রæয়ারির তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এতথ্য প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদন বলা হয়, ৪৩টি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে মার্চ মাসে ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, ওষুধ ও ফার্মেসি, পোশাক, যাতায়াত সহ বিভিন্ন খাতে খরচ করা হয়েছে। ফেব্রæয়ারি মাসে এই খরচ ছিল ৩১৩ কোটি টাকা বা ২৯ মিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, বাংলাদেশি নাগরিকেরা প্রতি বছর ১২,০০০ ডলার পর্যন্ত খরচ করতে পারেন। সেটি তারা কার্ডের মাধ্যমেও খরচ করতে পারেন, আবার দেশের বাইরে গেলে নগদ ডলারও সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারেন। তবে কার্ডের মাধ্যমে ডলার পেমেন্ট করতে গেলে একবারে সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার পর্যন্ত খরচ করা যায়।
নগদ ডলারের দাম বেশি থাকায় কার্ডের মাধ্যমে ডলার পেমেন্টে গ্রাহকেরা আগ্রহী হচ্ছেন উল্লেখ করে এ কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে দেশের কার্ব মার্কেট থেকে নগদ ডলার কিনতে গেলে ১১২ টাকার মতো খরচ করতে হয়। সেখানে অধিকাংশ ব্যাংকেই ১০৯-১০৯ টাকা ৫০ পয়সায় ইলেকট্রনিক ডলার কিনে কার্ডের মাধ্যমে খরচ করা যায়। এসব কারণে কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্টে সবাই আগ্রহী হচ্ছে। একটি বেসরকারি ব্যাংকের কার্ড বিভাগের প্রধান জানান, এমন অনেকেই আছেন যারা একাধিক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। ফলে গ্রাহকের সংখ্যা কার্ডের তুলনায় অনেক কম হবে।
এছাড়া ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের সবাই বিদেশ ভ্রমণ করেন না। তাই, বিদেশে ঘুরতে গিয়ে কার্ডের মাধ্যমে ডলার খরচ করা নাগরিকদের বড় অংশই দেশের উচ্চ মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত শ্রেণির।
পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশের একজন নাগরিক তার ইনকামের টাকা কীভাবে খরচ করবে তা সরকার ঠিক করে দিতে পারে না। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ডলার খরচ কমাতে চাইলে বিভিন্ন উপায়ে বিদেশ ভ্রমণকে নিরুৎসাহিত করা যেতে পারে। এছাড়া ডলারের দামকে বাজারভিত্তিক না করলে চাহিদা কমানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, এই লেনদেনের প্রায় ৭৭ শতাংশ ভিসা কার্ড ব্যবহার করে, ১৩ শতাংশ মাস্টারকার্ড ব্যবহার করে এবং ৯ শতাংশ আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ড ব্যবহার করে করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ডলার খরচ করা হয়েছে ভারতে। এছাড়া আমেরিকা, থাইল্যান্ড, আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কানাডা, নেদারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াতে সিংহভাগ খরচ করা হয়েছে।