কল্যাণ বড়–য়া, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) : চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গন্ডামারায় অবস্থিত ১৩২০ মেগাওয়ার্ট কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে জাতীয় গ্রিডে ৪ দিন বিদ্যুৎ সরবরাহের পর বৃহস্পতিবার রাত থেকে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে কয়লার সংকট। বিষয়টি নিশ্চিত করেন এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের উপ প্রকল্প পরিচালক (ইলেকট্রিক্যাল) প্রকৌশলী মো. ফয়জুর রহমান।
তিনি শুক্রবার এ ব্যাপারে আরো বলেন, এ প্রকল্প থেকে বিগত ৪ দিন যাবত গড়ে ৩০০-৩৫০ মেগাওয়ার্টের উপরে জাতীয় গ্রিড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছি। বৃহস্পতিবার রাতে কয়লা সংকটের কারণে উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হই। আগামী ২০ জুনের আগে আবার উৎপাদনে যেতে পারব কিনা জানিনা বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। চলতি মাসে এ প্রকল্পের জন্য কয়লা আসবে, তখন পুনরায় চালু করা হবে বলে সুত্রে জানা যায়।
চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি বাঁশখালীর ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টটি জাতীয় গ্রিডের ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইনের সঙ্গে যুক্ত হয়। এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের কর্মকর্তারা জানান, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প হলেও সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির কারণে পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা নেই। এই প্রযুক্তিতে কম কয়লা পুড়িয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। বাংলাদেশের শতভাগ বিদ্যুতায়ন ও শিল্পায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করবে এ প্রকল্প।
এদিকে গত ২৬ ফেব্রয়ারি দেশের সর্ববৃহৎ ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প (এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট) পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্ঠা তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরী। এরপর গত ২৪ মে থেকে জাতীয় গ্রিড়ে বিদ্যুৎ সরবারাহ শুরু করে। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রæপ ও চীনের সেপকো থ্রির মালিকাধীন বাঁশখালীর গন্ডামারায় ১৩২০ মেগাওয়ার্ট এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের ১ নম্বর ইউনিটের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলক সরবরাহ শুরু করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় এই বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও এসএস পাওয়ারের মধ্যে চুক্তি সই হয়। চুক্তিতে বলা হয়, ২৫ বছর ধরে পিডিবি এই কেন্দ্রে উৎপাদিত সব বিদ্যুৎ কিনবে। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২.৫০৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার, ঋণের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ১.৭৮২ বিলিয়ন ইউএস ডলার, ইকুইটির পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৭২৪.৬৭৮ মিলিয়ন ইউএস ডলার, এস আলম গ্রæপের (৭০%) এবং চীনের সেপকো থ্রি (৩০%) এর একটি যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সারাদেশে যখন বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে আলোচনা চলছিল বাঁশখালীর ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প (এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট) এর উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিড়ে যুক্ত হয়ে আশার আলো দেখালোও ৪ দিন যেতে না যেতে তা বন্ধ হয়ে যাওয়াতে হতাশায় ভোগছে সাধারন জনগণ।