আঞ্চলিক সড়কে দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি : সেফটি ফাউন্ডেশন
এস.ইসলাম জয় : মে মাসে সড়ক দুর্ঘটনার ৪১ শতাংশই ঘটেছে আঞ্চলিক সড়কে। এ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান ৪০৮ জন এবং আহত হয়েছেন ৬৩১ জন। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের চেয়ে দুর্ঘটনা কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ।
শুক্রবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
সংগঠনটি বলছে ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে মে মাসের সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন তৈরি করেছে। মে মাসে ৪৯১টি দুর্ঘটনায় ৬৭ নারী ও শিশু ৭৮ মারা যায়। এ ছাড়া মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৪১ জন এবং পথচারী ১০৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৭২ জন। মে মাসে ৬টি নৌ দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত ও ২ জন নিখোঁজ। ২৫টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
গত এপ্রিল মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে প্রতিদিন ১৬ দশমিক ৫৬ জন নিহত হয়েছিলেন। অন্যদিকে মে মাসে এ সংখ্যা ১৩ দশমিক ৬ জন। মে মাসে প্রাণহানি কমলেও তা কোনো টেকসই উন্নতির সূচক নির্দেশ করছে না বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। তারা বলেছে, বর্তমানে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে অতিরিক্ত গতির কারণে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। এই গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দুর্ঘটনা কমানো যাবে না। মে মাসে দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৪০ দশমিক ৯৩ শতাংশ আঞ্চলিক সড়কে, ৩৩ দশমিক ৬০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে ঘটেছে। দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেল ১৬৭টি, থ্রি হুইলার ১১৭ এবং ট্রাক ১১৪টি। মে মাসে রাজধানীতে ২৬টি দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত ও ৪৩ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে ঘটেছে। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে শরীয়তপুর ও রংপুর জেলায়। এই দুই জেলায় মে মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন কিছু উল্লেখযোগ্য সুপারিশ হচ্ছে দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগসহ সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর বাস্তবায়ন করতে হবে। পর্যবেক্ষণে সংগঠনটি বলছে, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা হয়েছে। অর্থাৎ অতিরিক্ত গতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়কে যানবাহনের বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দুর্ঘটনা কমানো যাবে না। গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণ যেমন দরকার, তেমনই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জনও প্রয়োজন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৬৫টি (৩৩.৬০%) জাতীয় মহাসড়কে, ২০১টি (৪০.৯৩%) আঞ্চলিক সড়কে, ৭৩টি (১৪.৮৬%) গ্রামীণ সড়কে, ৪৮টি (৯.৭৭%) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৪টি (০. ৮১%) সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনাগুলোর ৭১টি (১৪.৪৬%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৩৬টি (৪৮.০৬%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৭টি (২১.৯%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৫৪টি (১০.৯৯%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ২৩টি (৪.৬৮%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে। দুর্ঘটনাগুলো বিশ্লেষনে দেখা যায় ঘটেছে ভোরে ৫.২৯%, সকালে ২৫.২৫%, দুপুরে ২৮.৭১%, বিকেলে ১২.২১%, সন্ধ্যায় ৮.৯৬% এবং রাতে ১৯.৫৫%। সূত্র : বাংলাট্রিবিউন, প্রথম আলো