কোরবানির পশু ঢাকায় প্রবেশে চাঁদাবাজী প্রতিহত করা হবে : প্রাণিসম্পদ সচিব
আব্দুর রহিম : আসন্ন ঈদুল আযহায় পশু কোরবানির জন্য দেশেই পর্যাপ্ত কোরবানী যোগ্য পশু রয়েছে। এসব পশু যাতে ঢাকায় চাঁদাবাজি ছাড়া প্রবেশ করতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ। শনিবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বিভিন্ন খামার পরিদর্শন শেষে সাদেক এগ্রো লিমিটেডে গণামাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সচিব একথা বলেন। তিনি বলেন, গত ঈদুল আযহার চাইতে বেশি কোরবানী যোগ্য পশু এবার প্রস্তুত রয়েছে। এখন পর্যন্ত খামারি ও প্রান্তিক চাষীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ কোরবানী যোগ্য পশু প্রস্তুত রয়েছে। এই সংখ্যা বাড়তে পারে। সুতরাং এবার দেশের বাহির থেকে কোন পশু আমদানির প্রয়োজন হবে না। তাই আমরা সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছি। এজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড ফোর্স এর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে যেন বাহির থেকে কোন পশু না প্রবেশ করে। এসময় উপস্থিত ছিলেন, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদার, বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মারস এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন, সহ-সভাপতি আলী আজম রহমান শিবলী প্রমুখ। সচিব নাহিদ রশীদ বলেন, এবছর এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২৫ লাখ কোরবানী যোগ্য পশু প্রস্তুত থাকার তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। গতবছর কোরবানী যোগ্য পশু ছিল ১ কোটি ২১ লাখ। কিন্তু গতবছর ঈদুল আযহায় ৯৯ লাখ ৫০ হাজার পশু কোরবানী হয়েছিল। সেই হিসেবে এবার কোরবানী বাড়লেও পশুর সংকট হবে না। এসময় বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিশেশনের পক্ষে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন। তিনি বলেন, খামারিদের একটি বড় সমস্যা হলো গবাদি পশু ঢাকায় বা বিভিন্ন জেলা শহরে নিতে গেলে চাঁদা দিতে হয়। এ চাঁদা দিতে গিয়ে গরুম দাম বেশি হচ্ছে। আবার খামারে বিক্রি হোয়া গরু কোনো হাটের কাছদিয়ে গেলে ক্রেতাকে নাজেহাল হতে হয়। যাতে নাজেহাল হতে না হয় এজন্য একটি প্রজ্ঞাপন দরকার। তিনি আরো বলেন, নতুন করে যুক্ত হয়েছে সিটি করপোরেশন ঢাকার বাইরে খামার নেওয়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছি। ফলে আমারা কয়েক হাজার খামারি বিপদের মধ্যে রয়েছে। খামারিদের দাবির প্রেক্ষিতে ঈদের আগে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোরবানী পশুর বিক্রেতা বা খামাড়ি পর্যায়ে কেউ যেন অযথা হয়রানি বা চাঁদাবাজীর শিকার না হয় সেজন্য জাতীয় হটলাইন নম্বর ৯৯৯ যুক্ত করার বিষয়ে আশ্বাস দেন সচিব। এর বাহিরে অন্য কোন হটলাইন নম্বর যুক্ত করার প্রয়োজন থাকলেও সেটিও আগামী ১৪ জুন আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান সচিব। বিভিন্ন উপায়ে দেশের বাহির থেকে পশু দেশে ঢুকছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, আমরা নিজেরা যেহেতু চোরাচালান বা সীমান্তের বিষয়টা দেখি না। অন্য মন্ত্রণালয় বা প্রতিষ্ঠান দেখে। তাই আমরা চেষ্টা করচি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিজিবির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আমাদের চেষ্টার কোন ত্রæটি নেই। এমনকি দেশের বাহির থেকে যেন মাংস ঢুকতে না পারে সেদিকেও নজরদারি রয়েছে।
পশু খাদ্যের দাম কমানো বিষয়ে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদার বলেন, ইতোমধ্যে পশু খাদ্যের দাম কিছুটা কমাতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এখন কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচুর ঘাস উৎপাদন হচ্ছে। ফলে দাম অনেকটা কমাতে সক্ষম হয়েছি। আগামি দুই-তিন মাস পর থেকে খাদ্যে দ্রব্যের দাম আরো কমিয়ে আনতে সক্ষম হবো বলে আশাকরছি। সূত্র : বার্তা২৪