তিন কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে দরপতন ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৩০০ কোটি টাকার বেশি
মাসুদ মিয়া: দেশের শেয়ারবাজার গতকাল সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবারও দর পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত দরপতন হয়েছে। গতকাল প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। পাশাপাশি কমেছে মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হলো। দিনের লেনদেন শেষে মূল্যসূচক কমলেও এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসই’র প্রধান সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা প্রথম আধাঘণ্টা জুড়েই অব্যাহত থাকে।
কিন্তু দুপুর ১২টার পর থেকে বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দরপতনের তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে এই প্রবণতা। ফলে প্রধান সূচকের মোটামুটি বড় পতন দিয়ে শেষ হয় দিনের লেনদেন। মঙ্গলবার লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে মাত্র ৪৫ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিপরীতে ১২১টির দাম কমেছে। এছাড়া ১৬৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৯৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ১০ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৮৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। প্রধান মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের গতি। বাজারটিতে দিনভর লেনদেন হয়েছে ৬৬৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯৮১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৩১২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে সবথেকে বেশি লেনদেন হয়েছে নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪২ কোটি ২০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সি পার্ল বিচ রিসোর্টের ৩০ কোটি ৭১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩০ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইয়াকিন পলিমার, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৮৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮০টির এবং ৭১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- নাভানা ফার্মা, এডিএন টেলিকম, ইয়াকিন পলিমার, বঙ্গজ লিঃ, কে এন্ড কিউ, খান ব্রাদার্স পিপি, জি কিউ বলপেন, সী পার্ল বীচ, স্টাইল ক্র্যাফট ও মিডল্যান্ড ব্যাংক।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- আল-আরাফা ইসলামি ব্যাংক, ট্রাস্ট ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, নর্দার্ন জুট, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল টি, প্রাইম ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও বাংলাদেশ জেঃ ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক ২৯ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৬২০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন সিএসইতে ১৮৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৩টির, কমেছে ৮০টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৭১টির দাম। দিন শেষে সিএসইতে ৯ কোটি ৬৯ লাখ ৮৬ হাজার ৯৭ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৯ কোটি ৭১ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৫ টাকার শেয়ার।