প্রস্তাবিত বাজেট অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও সংকট সমাধানে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ : সিপিডি
সোহেল রহমান : বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর সম্মাœাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেট অবৈজ্ঞানিক ও অবাস্তবায়নযোগ্য। এটা অরাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক পদক্ষেপ। নির্বাচনী বছরে এমন একটা পদক্ষেপ হতে পারে না। এটা কোনো রাজনীতির মধ্যেই পড়ে না। এটা অবশ্যই সংশোধন করতে হবে। রোববার রাজশানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে সিপিডি বাজেট ডায়ালগ-২০২৩ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে দেশের এসডিজি বাস্তবায়ন, এসডিজি’র উত্তরণ যে কোনো লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাংঘর্ষিক। আমরা বিশ্বাস করি- আলোচনার সুযোগ রয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট একটা ড্রাফট। এটা আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট মূল সামষ্টিক অর্থনৈতিক বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে বলে মনে হচ্ছে। ফলস্বরূপ বাজেটে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে উল্লেখযোগ্য ব্যবধান রয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেট সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে অত্যধিক মুদ্রাস্ফীতি। চলমান সংকট মোকাবিলায় বাজেট ব্যবস্থায় প্রতিফলন হয়নি। প্রস্তাবিত বাজেট চলমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও সংকট সমাধানে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।
সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযান-এর নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, খাতা কিনতে হয় শিক্ষার্থীদের। সেখানে কলমের ওপর আমরা ট্যাক্স বসিয়ে দিয়েছি। সোশ্যাল সেফটি নেট প্রোগ্রামগুলোর বরাদ্দ ১০ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে। বুঝলাম, সেখানে আইএমএফ-এর একটা ইনস্ট্রাকশন ছিল।
প্রস্তাবিত আয়কর আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম কোম্পানি অ্যাক্ট বিশাল বিশাল পরিবর্তন নিয়ে আসলো। সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এনজিও, সমিতি, নট ফর প্রফিট সবকিছুই ঢুকে গেছে। প্রতিটি আইনে তো একটা স্পিরিট থাকে। কোম্পানি অ্যাক্টে কী করে নট ফর প্রফিট কোম্পানিতে ঢুকে গেলো। রোববার সেটা সংসদে তোলা হচ্ছে। এটা কী করে হলো, কার মাথা থেকে এসেছে জানি না, কী লাভ হবে? যদি কোনো ইনকাম না থাকে তা-ও ০.৬ শতাংশ দিতে হবে। শহরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর দিতে পারলেও কীভাবে একটি গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্পোরেট কর দেবে? আমরা বুঝতে পারছি না। শিক্ষাবান্ধব সরকার বলা হচ্ছে। তবে এটা কোনদিক থেকে শিক্ষাবান্ধব হল বুঝতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, এই করের আওতা বাড়ানোর আর কি কোনো উপায় ছিল না। নট ফর প্রফিটের কাছ থেকে যদি ০.৬ নেওয়া হয় নেট রিসিটের ওপর তাহলে ৪০-৪৫ কোটি টাকা বাড়বে। হাজার হাজার কোটি টাকা আমরা ধরতে পারি না আর এই ৪০-৪৫ কোটি টাকা নেবো ট্যাক্সবেজ বাড়ানোর নামে। ঠিক আছে, সরকারের কাছে একটা অনুরোধ আমরা এনজিওরা এখন সরকারের কাছ থেকে অনুদান নেবো। সেটা সরকার বাজেটে ব্যবস্থা করবে।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর জ্বালানি উপদেষ্টা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, বড় বাজেট দিয়ে সরকার খুশি হলেও আমরা আতঙ্কগ্রস্ত। বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত অভিঘাতে আছে। এই খাতে এক ধরনের লুণ্ঠনমুখী ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা বর্তমানে বিদ্যুতের কষ্ট রয়েছি।
ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সামির সাত্তার বলেন, রক্ষণশীল বিনিয়োগের বছর চলছে। এই সময়ে শ্রমিকের মজুরির চাহিদা পূরণের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে। করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা করলে মুদ্রাস্ফীতির বাজারে কিছুটা সাহায্য করবে বলে মনে করি। এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, বাজেট পাসের আগে আয়কর আইন পাস করা হচ্ছে। এটা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। আইনের সঙ্গে অর্থবিলের সম্পর্ক নেই। কেন এটা করা হচ্ছে, আমরা বোধগম্য নয়।
প্রস্তাবিত বাজেট অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও সংকট সমাধানে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ : সিপিডি
সোহেল রহমান : বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর সম্মাœাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেট অবৈজ্ঞানিক ও অবাস্তবায়নযোগ্য। এটা অরাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক পদক্ষেপ। নির্বাচনী বছরে এমন একটা পদক্ষেপ হতে পারে না। এটা কোনো রাজনীতির মধ্যেই পড়ে না। এটা অবশ্যই সংশোধন করতে হবে। রোববার রাজশানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে সিপিডি বাজেট ডায়ালগ-২০২৩ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে দেশের এসডিজি বাস্তবায়ন, এসডিজি’র উত্তরণ যে কোনো লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাংঘর্ষিক। আমরা বিশ্বাস করি- আলোচনার সুযোগ রয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট একটা ড্রাফট। এটা আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট মূল সামষ্টিক অর্থনৈতিক বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে বলে মনে হচ্ছে। ফলস্বরূপ বাজেটে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে উল্লেখযোগ্য ব্যবধান রয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেট সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে অত্যধিক মুদ্রাস্ফীতি। চলমান সংকট মোকাবিলায় বাজেট ব্যবস্থায় প্রতিফলন হয়নি। প্রস্তাবিত বাজেট চলমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও সংকট সমাধানে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।
সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযান-এর নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, খাতা কিনতে হয় শিক্ষার্থীদের। সেখানে কলমের ওপর আমরা ট্যাক্স বসিয়ে দিয়েছি। সোশ্যাল সেফটি নেট প্রোগ্রামগুলোর বরাদ্দ ১০ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে। বুঝলাম, সেখানে আইএমএফ-এর একটা ইনস্ট্রাকশন ছিল।
প্রস্তাবিত আয়কর আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম কোম্পানি অ্যাক্ট বিশাল বিশাল পরিবর্তন নিয়ে আসলো। সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এনজিও, সমিতি, নট ফর প্রফিট সবকিছুই ঢুকে গেছে। প্রতিটি আইনে তো একটা স্পিরিট থাকে। কোম্পানি অ্যাক্টে কী করে নট ফর প্রফিট কোম্পানিতে ঢুকে গেলো। রোববার সেটা সংসদে তোলা হচ্ছে। এটা কী করে হলো, কার মাথা থেকে এসেছে জানি না, কী লাভ হবে? যদি কোনো ইনকাম না থাকে তা-ও ০.৬ শতাংশ দিতে হবে। শহরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর দিতে পারলেও কীভাবে একটি গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্পোরেট কর দেবে? আমরা বুঝতে পারছি না। শিক্ষাবান্ধব সরকার বলা হচ্ছে। তবে এটা কোনদিক থেকে শিক্ষাবান্ধব হল বুঝতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, এই করের আওতা বাড়ানোর আর কি কোনো উপায় ছিল না। নট ফর প্রফিটের কাছ থেকে যদি ০.৬ নেওয়া হয় নেট রিসিটের ওপর তাহলে ৪০-৪৫ কোটি টাকা বাড়বে। হাজার হাজার কোটি টাকা আমরা ধরতে পারি না আর এই ৪০-৪৫ কোটি টাকা নেবো ট্যাক্সবেজ বাড়ানোর নামে। ঠিক আছে, সরকারের কাছে একটা অনুরোধ আমরা এনজিওরা এখন সরকারের কাছ থেকে অনুদান নেবো। সেটা সরকার বাজেটে ব্যবস্থা করবে।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর জ্বালানি উপদেষ্টা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, বড় বাজেট দিয়ে সরকার খুশি হলেও আমরা আতঙ্কগ্রস্ত। বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত অভিঘাতে আছে। এই খাতে এক ধরনের লুণ্ঠনমুখী ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা বর্তমানে বিদ্যুতের কষ্ট রয়েছি।
ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সামির সাত্তার বলেন, রক্ষণশীল বিনিয়োগের বছর চলছে। এই সময়ে শ্রমিকের মজুরির চাহিদা পূরণের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে। করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা করলে মুদ্রাস্ফীতির বাজারে কিছুটা সাহায্য করবে বলে মনে করি। এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, বাজেট পাসের আগে আয়কর আইন পাস করা হচ্ছে। এটা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। আইনের সঙ্গে অর্থবিলের সম্পর্ক নেই। কেন এটা করা হচ্ছে, আমরা বোধগম্য নয়।