এফবিসিসিআই’র পরবর্তী সভাপতি হিসেবে মাহবুবুল আলমের নাম ঘোষণা করলেন সাবেক সভাপতিরা
আমিনুল ইসলাম: ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) পরবর্তী সভাপতি হিসেবে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) সভাপতি মো. মাহবুবুল আলমের প্রতি আকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতিরা। মঙ্গলবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই এর পরবর্তী সভাপতি হিসেবে মো. মাহবুবুল আলমের নাম ঘোষণা করেন তারা। ডেভেলপিং স্মার্ট লিডারশিপ টু ক্রিয়েট স্মার্ট ইকোনমি’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এ ঘোষণা দেন। এসময় মঞ্চে উপস্থিত থেকে এফবিসিসিআই’র পরবর্তী সভাপতি হিসেবে মো. মাহবুবুল আলমের প্রতি সমর্থন জানান এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বর্তমান সভাপতি মো জসিম উদ্দিন, সাবেক সভাপতি এ. কে. আজাদ, সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান, কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, মীর নাসির, আব্দুল আওয়াল মিন্টু। এসময় উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতারাও মো. মাহবুবুল আলমের প্রতি সমর্থন জানান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই এর সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী, মনোয়ারা হাকিম আলী, মো: কামাল উদ্দিন, মুনতাকিম আশরাফ, বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা চৌধুরী বাবু।
এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এমপি অসুস্থ থাকায় পরবর্তীতে অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মÐলীর সদস্য এবং শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক কমিটির স্ট্যান্ডিংর চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বর্তমানে যে অবস্থানে এসেছে, সেটা প্রশংসনীয়। বেসরকারি খাতের কারণে এ অবস্থায় আসা সম্ভব হয়েছে। তবে, বর্তমানে ডলার সংকট, মূল্যস্ফীতি এগুলো সারাবিশ্বে আছে। বাংলাদেশেও কিছুটা আছে।
তিনি বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের সব সুযোগসুবিধা দিচ্ছে। ব্যবসায়ীদের বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রী কোরবানি ঈদের পর বসবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি সব ব্যবসায়ীর কথা শুনবেন। আশা করি, ব্যবসায়ী সমাজের জন্য সেটি অনেক ভালো হবে। এফবিসিসিআই সম্পর্কে তিনি বলেন, এক সময় এফবিসিসিআইতে প্রক্সি ভোটে নেতা নির্বাচিত হতো। এখন সেই পদ্ধতি নেই। এখানে যোগ্যরাই নির্বাচিত হয়ে আসেন। সালমান এফ রহমান বলেন, দীর্ঘ সময় পর চট্টগ্রাম থেকে নেতা পাচ্ছে এফবিসিসিআই। এজন্য মো. মাহবুবুল আলমকে অভিনন্দন জানান তিনি।
এফবিসিসিআইর বর্তমান সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, এফবিসিসিআইতে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। ভালো লিডার থাকলে সেগুলো সম্ভব। সরকার বলেছে, দেশের অর্থনীতির ৮২ শতাংশ বেসরকারি খাতের অবদান। এ সংগঠনে উপযুক্ত নেতা দরকার। আগামী নেতৃত্ব এফবিসিসিআইকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সাবেক সভাপতি এ. কে. আজাদ বলেন, এ সংগঠনে যিনি যখন দায়িত্বে থাকেন, তখন তিনি কীভাবে সংগঠনটিকে পরিচালনা করেন সেটাই বিবেচনার বিষয়। তিনি বলেন, এফবিসিসিআইতে অনেক সদস্য বেড়েছে। সেবার মানও সেই হারে বাড়াতে হবে। মীর নাসির বলেন, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় নানা কারণে অর্থনীতি ক্রান্তিকাল পার করছে। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং ব্যবসায়ী সমাজকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মাহবুবুল আলম যোগ্য নেতৃত্ব দিতে পারবেন বলেই আশা করি।
সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, মতবিরোধ ভুলে সবাইকে ভোটের মাধ্যমে পরিচালনা পর্ষদ গঠন করতে হবে। আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে স্মার্ট ও যোগ্য নেতৃত্ব দরকার। সেই যোগ্যতা আছে মাহবুবুল আলমের। সভাপতি প্রার্থী মো. মাহবুবুল আলম তার বক্তব্যে বেসরকারী খাতের অধিকতর উন্নয়নে তার দৃপ্ত প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। নির্বাচিত হলে সিনিয়রদের উপদেশ এবং পর্ষদের নির্বাচিত প্রতিনিধি সমন্বয়ে সকলে মিলে একবিংশ শতাব্দির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট নেতৃত্ব তৈরিতে কাজ করার অঙ্গীকার করেন তিনি।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪১ সালে সুখী, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে উন্নত, আধুনিক ও স্মার্ট কমিউনিটি, স্মার্ট অর্থনীতি গঠনে কাজ করবো আমরা। এফবিসিসিআই তে গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এই সংগঠনকে আরও গতিশীল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও এফবিসিসিআই বলিষ্ঠ ভ‚মিকা পালন করবে বলেও জানান তিনি। বেসরকারী খাতকে এগিয়ে নিতে এসময়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি।