ফ্রান্স জুড়ে কিশোরদের বিক্ষোভ, সংঘর্ষ-লুট অগ্নিসংযোগ অব্যাহত
সাজ্জাদুল ইসলাম : বিক্ষোভ ও দাঙ্গাকারীদের অধিকাংশই শিশু-কিশোর যাদের বয়স ১৩-১৭ বছর। শুক্রবার টানা চার দিন ধরে দাঙ্গা চলে দেশটিতে। ফ্রান্সের বাইরের কয়েকটি অঞ্চলেও দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার এক ট্রাফিক চেক পয়েন্টে ১৭ বছরের তরুণ নাহেল এমকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করার পর এ বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সূত্র: আল-জাজিরা
দাঙ্গা দমনে শুক্রবার হাল্কা সাঁজোয়াযানের সমর্থনপুষ্ট ৪৫ হাজার পুলিশ অফিসার মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম শহর লিয়নে টহল দিচ্ছে পুলিশের হেলিকপ্টার। বিপুল পুলিশ মোতায়েন সত্তে¡ও লিয়ন, মার্সেইল ও গ্রেনোবল শহরে তরুণ দাঙ্গাকারীরা দোকানপাঠ লুট, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে।
সরকার শান্ত থাকার জন্য বার বার আবেদন জানানো এবং শত শত গ্রেপ্তার করা সত্তে¡ও দাঙ্গা দিন দিন বাড়ছে। পুলিশের কথিত বর্ণবাদী হামলায় তরুণ নিহত হওয়ার ঘটনায় দেশটির শিশু-কিশোররা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ দেশজুড়ে এমন সহিংসতার নিন্দা করেছেন। তিনি বিক্ষোভকারীদের সুযোগ নেওয়ার অভিযোগ করেছেন। দেশজুড়ে বিক্ষোভ আরও প্রকট রূপ নেওয়ায় জরুরি বৈঠক কেেরছেন ম্যাক্রোঁ। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সংবেদনশীন বিষয়গুলো সরিয়ে ফেলারও আহŸান জানিয়েছেন তিনি।
দাঙ্গার জন্য গ্রেপ্তারকৃতদের এক তৃতীয়াংশ তরুণ বা খুব অল্পবয়সী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন বলেন, শুক্রবার রাতে ৪৭১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার আগের রাতে আটক করা হয় ৮১৭ জনকে। মার্সেইলিতে আরও দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে ৮৭ জনকে আটক করা হয়েছে।রবাড়ির কিশোর ও তরুণদের নিয়ন্ত্রণ করতে অভিভাবকদের পদক্ষেপ নেওয়ার আহŸান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।
বিক্ষোভকারীরা বলছে, ফ্রান্সের স্পিরিট ছিল সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতা। সেই ফ্রান্সের এখন আর তার কোনো অস্তিত্ব নেই। দেশটা এক পুলিশ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
মঙ্গলবার পুলিশের গুলিতে নিহত নাহেলের পরিবারের সদস্যরা আলজেরিয়া থেকে এসে ফ্রান্সে স্থায়ী হয়েছেন। তাদের আর্থিক অবস্থাও খুব ভালো নয়। প্যারিসের নানতের উপশহরটি মূলত দরিদ্র অধ্যুষিত এলাকা। সেখানেই মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি। নাহেল ও তার মা মৌনিয়া। তারা মুসলমান।
নাহেল নিহত হওয়ার পরই বিক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে নানতেরে। তারপর বৃহস্পতিবার বিকেলে এক অনলাইন বার্তায় নাহেলের মা মৌনিয়া তার নিহত ছেলের জন্য ন্যায়বিচারের দাবি জানান। তার এই অনলাইন বার্তা পোস্ট হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে আন্দোলন তীব্র রূপ নিতে থাকে। মূল বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল প্যারিসে। তবে বৃহস্পতিবার থেকে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।