সোহেল রহমান : সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (উড়াল সড়ক) এয়ারপোর্ট-ফার্মগেট অংশ সেপ্টেম্বরে খুলে দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সড়ক উদ্বোধন করবেন। দৃষ্টিনন্দন এ এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দেয়ার মধ্যদিয়ে বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত (প্রায় ১২ কিলোমিটার) অসহনীয় যানজট থেকে মুক্তি পাবে নগরবাসী। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ পরিদর্শনকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ কথা জানান।
এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে সেতুমন্ত্রী বলেন, এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে রাজধানীতে যানবাহনের চাপ ও যানজট অনেকাংশে কমে যাবে। এ সড়কে মোটরসাইকেল ও থ্রি হুইলার চলাচল বিরত রাখা হবে। এ সড়কে যানবাহন চলাচল নিরবচ্ছিন্ন রাখা হবে। সার্বিকভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থার সহজীকরণ ও আধুনিকায়ন হলে তা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা রাখবে। যা জিডিপি-তে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রসঙ্গত: এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে-তে বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়ক যেতে সেতুমন্ত্রীর সময় লেগেছে মাত্র ১০ মিনিট।
সেতুমন্ত্রী জানান, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি)। বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-পুরানঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুতুবখালী) পর্যন্ত এর দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার। এতে ব্যয় হচ্ছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার বহন করছে ২ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা। তিন ধাপে প্রকল্পটি সম্পন্ন হচ্ছে। প্রকল্পের সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৬৩ দশমিক ২০ শতাংশ। এক্সপ্রেসওয়ে ঘুরে দেখা যায়, বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও এলাকার কাজ প্রায় শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এখন কিছু জায়গায় বিটুমিন দেয়াসহ রোড মার্কিংয়ের কাজ হচ্ছে। কোথাও কোথাও দেয়া হচ্ছে রঙের প্রলেপ। ধোয়ামোছার কাজ করছেন শ্রমিকরা। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬৩ দশমিক ২০ শতাংশ। বিমান বন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত প্রথম ধাপে প্রকল্পের ভৌত কাজের অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। এক হাজার ৪৮২ টি পাইল, ৩২৬টি পাইল ক্যাপ, ৩২৫টি কলাম, ৩২৫টি ক্রস-বিম, ৩ হাজার ৪৮টি আইগার্ডার নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ৩ হাজার ৪৮ টি আই গার্ডার এবং ৩২৮টি ব্রিজ ডেক স্থাপন কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে বনানী থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৫৪ দশমিক ২২ শতাংশ। এক হাজার ৬৩৩টি পাইল, ৩২৩টি কলাম, ৩২০টি ক্রস-বিম, ২ হাজার ৩০৫টি আই গার্ডার নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ২ হাজার ৪৪টি আই গার্ডার এবং ২৩৩ টি ব্রিজ ডেক স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কুড়িল এলাকায় সেন্ট্রাল কন্ট্রোল বিল্ডিং (সিসিবি) কাজের ভৌত অগ্রগতি ৯১ দশমিক ১৫ শতাংশ। তৃতীয় ধাপে মগবাজার রেল ক্রসিং থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুতুবখালী) পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি কম, মাত্র ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ।