এসইআইপি থেকে প্রশিক্ষনার্থীর ৭১ শতাংশের কর্মসংস্থান হয়েছে : অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব
মো. আখতারুজ্জামান : দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের বিশাল সংখ্যক যুবসমাজকে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইআইপি)। এই প্রকল্পের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ১৪০টি ট্রেডে ৭ লাখ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭১ শতাংশের কর্মসংস্থান হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।
শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত দিনব্যপী কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ একথা বলেন। এসইআইপি এ কর্মশালার আয়োজন করে।
এসইআইপি’র নির্বাহী প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ফতেমা রহিম ভীনা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) নাসরীন আফরোজ এবং জাতীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন তহবিল (এনএইচআরডিএফ) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এখলাছুর রহমান।
ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, আমাদের এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য শুধু চাকারি দেয়ার নয়, তারা যাতে প্রশিক্ষণ নিয়ে উদ্যোক্তা হতে পারে। সেইসঙ্গে দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে যুবসমাজের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা বর্তমান সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। একজন লোক যখন দক্ষণ হয় তখন আর সেই পরিবারে দারিদ্রতা থাকে না। আমাদের যাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তারা যেমন দেশে দক্ষ্য হচ্ছে তাদের একটি অংশ চলে যাচ্ছে বিদেশে। যাদের হাত ধরে আসছে রেমিটেন্স। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনএসডিএ’র নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) নাসরীন আফরোজ বলেন, দক্ষতা অর্জনকে সরকার একটি অগ্রাধিকার কার্যক্রম হিসেবে গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে গঠন করা হয়েছে এনএসডিএ। দক্ষতা ও প্রশিক্ষণকে সুনির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার জন্য এ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রমকে সমন্বিতভাবে পরিচালিত করা, মান উন্নয়ন ও মান তদারকি করার জন্য রেগুলেটরি অথরিটি হিসেবে এনএসডিএ’র প্রচষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শ্রমবাজারের চাহিদা ও পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে দক্ষতা উন্নয়নে কার্যক্রম গ্রহণ ও এ সকল কার্যক্রমে অংশীজনদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিতকরণ এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ সম্পর্কে বিদ্যমান সামাজিক নেতিবাচক ধারণা দূরীকরণে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এনএইচআরডিএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এখলাছুর রহমান তার বলেন, বিশাল সংখ্যক এই যুব সমাজকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সম্মানজনক কর্মসংস্থানে নিযুক্ত হতে বর্তমান সরকারের অনেকগুলো মন্ত্রণালয় নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করছে। সভাপতির বক্তব্যে এসইআইপি’র নির্বাহী প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ফতেমা রহিম ভীনা বলেন, এডিবি’র আর্থিক সহায়তায় ২০১৪ সালের জুলাই মাসে এসইআইপি যাত্রা শুরু করে। প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের শ্রমশক্তির সময়পযোগী পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য দক্ষতা উন্নয়নে নিয়োজিত দেশীয় প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদানের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মোট ৮ লাখ ৪১ হাজার কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে প্রকল্পের কাজ পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, শুধু প্রশিক্ষণ প্রদান করাই এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য নয়। সফলভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের মাঝে একটি অর্থপূর্ণ ও মসৃণ যোগসূত্র তৈরিতে এসইআইপি কাজ করে যাচ্ছে। কর্মশালায় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, এসইআইপি, এনএসডিএ ও এনএইচআরডিএফ’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ সভায় প্রতি বছর জুলাই মাসের ১৫ তারিখকে বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস হিসেবে উদযাপন করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রতিবছর ১৫ জুলাই বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপিত হয়ে আসছে।