ভারতে দু’দিনব্যাপী জি-২০ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে সকলকে আন্তরিক হওয়ার আহবান
সোহেল রহমান : চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে সকলকে আন্তরিক হয়ে সমাধানের আহবান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সোমবার ভারতের গুজরাটের গান্ধীনগরে শুরু হওয়া ‘জি-২০’ দেশসমূহের অর্থমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের দু’দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রথম দিনে ‘অতিথি দেশ’ (গেস্ট কান্ট্রি)-এর অর্থমন্ত্রী হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ আহবান জানান।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, ‘জি-২০’ জোটে বাংলাদেশ সদস্য নয়। তবে শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ ভারত সদস্য দেশগুলোর বাইরেও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ৯টি দেশকে ‘গেস্ট কান্ট্রি’ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এসব দেশের প্রতিনিধিরা জি-২০ সম্মেলনের বিভিন্ন বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে গেস্ট কান্ট্রি’র মর্যাদা পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারসহ বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছে। এবারের জি-২০ সম্মেলনের ¯েøাগান নির্ধারণ করা হয়েছেÑ এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ।
অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, বিশ্বব্যাপী যে চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট তৈরী হয়েছেÑ এ বিষয়ে আমাদেরকে অধিকতর সচেতন হতে হবে। এই সংকট নিরসনে অবশ্যই আমাদের সকলকে আন্তরিক হয়ে সমাধান করতে হবে। যেখানে জি-২০ জোটের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রয়েছে।
জি-২০ প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়া বাংলাদেশের জন্য বৈশ্বিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার অংশ হওয়ার এক অনন্য সুযোগÑ এমন অভিমত ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বিশ্বের শিল্পোন্নত ২০টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত ‘জি-২০’ হচ্ছে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক জোট। বৈশ্বিক অর্থনীতির মূল বিষয়সমূহের ওপর আলোচনার জন্য বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একত্রিত করার উদ্দেশ্যে এই জোট গঠিত হয়।
অচিরেই বাংলাদেশ জি-২০ জোটে সদস্য হিসাবে অন্তর্ভূক্ত হবেÑ এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এবারের সম্মেলনের আয়োজক দেশ ভারত দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশকেই ‘গেস্ট কান্ট্রি’ হিসাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিবেশী বন্ধু দেশের কাছ থেকে পাওয়া এ আমন্ত্রণ অবশ্যই আমাদের জন্য অনেক সম্মানের।
সম্মেলনে বাংলাদেশের ধারাবাহিক অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের জিডিপি ছিল মাত্র ৬৩০ কোটি ডলার। এখন আমাদের জিডিপি ৪৬ হাজার কোটি ডলার। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী ও দৃঢ় নেতৃত্বে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ, ২০৩৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ২৪তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছেÑ ২০৩১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি স্মার্ট উন্নত দেশে পরিণত হওয়া।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, আগামী ৯-১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনেও গেস্ট কান্ট্রি হিসাবে অংশ নেবে বাংলাদেশ। অনুষ্ঠেয় রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের ওই শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-কে যোগ দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।