শিশুর ডেঙ্গু কিনা, কীভাবে বুঝবো?
পারমিতা হিম
একই মানুষের সারা জীবনে ৪ বার ডেঙ্গু হতে পারে। শিশুর জন্য এ রোগ আরও মারাত্মক কারণ তাদের মধ্যে ডেঙ্গুর লক্ষণ প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করতে না পারার কারণে বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শিশুমৃত্যর ঘটনা বাড়ছে। এ লেখাটি আন্তর্জাতিক রোগ গবেষণা সংস্থা (ঈবহঃবৎং ভড়ৎ উরংবধংব ঈড়হঃৎড়ষ ধহফ চৎবাবহঃরড়হ) এর পরামর্শ ও ভারত-বাংলাদেশের ডেঙ্গু গবেষকদের গবেষণার ভিত্তিতে লেখা হয়েছে। ডেঙ্গু জ্বর একটি ভাইরাল মশাবাহিত রোগ, যার ফলে প্রচÐ জ্বর, শরীরে ফুসকুড়ি এবং সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ দেখা যায়। ৪ ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাস আছে এবং একজন ব্যক্তি একাধিকবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারেন। ডেঙ্গু কখনো কখনো প্রাণঘাতি ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার (উঐঋ) নামে পরিচিত একটি মারাত্মক রোগে পরিণত হতে পারে। ডেঙ্গু শনাক্তের জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয়। সঠিক যতœ পেলে অধিকাংশ রোগী ১০ দিনের মধ্যেই ডেঙ্গু থেকে সেরে ওঠে।
ডেঙ্গু জ্বর কী: ডেঙ্গু গ্রীষ্মপ্রধান (ঞৎড়ঢ়রপধষ) অর্থাৎ যেসব অঞ্চলে অতিরিক্ত গরম এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে (ঝঁনঃৎড়ঢ়রপধষ ৎবমরড়হং) সাধারণ মশাবাহিত রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম। আমাদের দেশে প্রতিবছরই ডেঙ্গুতে কয়েক হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়। এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়। উষ্ণ, স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া, এবং জমে থাকা পানিতে এ মশা বংশবৃদ্ধি করে। তাই বর্ষাকালে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যায়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অপরিষ্কার এবং ঘণবসতিপূর্ণ জায়গায় জীবনযাপন, ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। যে ভাইরাস ডেঙ্গু সৃষ্টি করে তা ডেঙ্গু ভাইরাস (ডিইএনভি) নামে পরিচিত। ৪ ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাস আছে: ডিইএনভি-১, ডিইএনভি-২, ডিইএনভি-৩ এবং ডিইএনভি-৪। একজন ব্যক্তি ৪ বার ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে পারে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের কখনো কখনো ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার (উঐঋ) নামে পরিচিত আরও একটি গুরুতর রোগ হতে পারে। এটি দ্রæত শনাক্ত ও চিকিৎসা করা না হলে মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। ১২ মাসের কম বয়সী শিশুদের ডেঙ্গু হলে তা মারাত্মক আকার ধারণের ঝুঁকি থাকে। আপনি যদি এমন জায়গায় থাকেন বা ভ্রমণ করেন যেখানে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি, তাহলে শিশুকে মশার কামড় থেকে রক্ষা করতে অতিরিক্ত সতর্ক থাকুন।
কীভাবে ডেঙ্গু জ্বর ছড়ায়: ডেঙ্গু ভাইরাস প্রধানত এডিস ইজিপ্টাই (অবফবং ধবমুঢ়ঃর) প্রজাতির স্ত্রী মশার কামড়ে ছড়ায়। এই একই মশার কারণে চিকুনগুনিয়া হয় এবং জিকা ও পীতজ্বরের (ইয়েলো ফিভার) মতো অন্যান্য রোগও ছড়িয়ে থাকে। ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে যদি কোনো মশা কামড়ায় তবে প্রথমে সেই মশা সংক্রমিত হবে। তারপর এই সংক্রমিত মশাটি যাদেরই কামড়াবে তারাই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হবে। মূলত এই মশার কামড়ের মাধ্যমেই ভাইরাসটি অন্যদের মধ্যে ছড়ায়। এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলা কামড়ায়, বিশেষত ভোরে ও সন্ধ্যার দিকে সবচেয়ে বেশি কামড়ায়। গর্ভবতী মায়ের ডেঙ্গু হলে তার সন্তানেরও ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে, যদিও এটি খুব বেশি হতে দেখা যায় না। আক্রান্ত মায়ের দুধ পান করলেও ডেঙ্গু আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে।
কাউকে রক্ত দিলে কিংবা অন্য কোনো অঙ্গদান করলে এর মাধ্যমেও ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘটতে পারে, তবে এমন ঘটনা খুবই বিরল। শিশু খুব দ্রæতই আপনার ও চারপাশের জগতের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে হাসি ব্যবহার করতে শুরু করবে। ৩ মাসের মধ্যে সে এমনকি ‘আলাপ’ও শুরু করে দিতে পারে। সে আবোলতাবোল শব্দ আর হাসি দিয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করতে পারে। এসময় আপনি হেসে, আওয়াজ করে বা কথা বলেও তার সঙ্গে ‘আলাপে’র চেষ্টা করতে পারেন।
শিশুর ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ কী: কেউ কেউ কোনো লক্ষণ ছাড়াই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারে। শিশুদের মধ্যে ডেঙ্গুর লক্ষণ প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। ডেঙ্গু মশা কামড়ের প্রায় ৪ থেকে ১০ দিন পর এর লক্ষণগুলো দেখা দেয় এবং প্রায় ৩ থেকে ৭ দিন এ রোগ থাকে। শিশুদের ডেঙ্গু হলে সাধারণত ভাইরাল ফ্লু’য়ের মতো লক্ষণ দেখা যায়। তাই শিশুর ডেঙ্গু হয়েছে নাকি সাধারণ ভাইরাল ফ্লুসেটা বোঝা বেশ কঠিন।
বাচ্চার ডেঙ্গু হয়েছে কিনা বুঝতে নিচের লক্ষণগুলো খেয়াল করুন: শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকবে (১০১ এর কাছাকাছি বা তারও বেশি) এবং প্রায় এক সপ্তাহ পর্যন্ত এই জ্বর থাকবে। জ্বর নেমে গেলে শরীরের তাপমাত্রা অনেক কমে যাবে (৯৬.৮ক্ক ফারেনহাইট বা তারও কম)। শিশু অতিরিক্ত ঘুমাবে এবং খুব খিটখিটে মেজাজে থাকবে। খেতে চাইবে না, স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি কান্না করবেদাঁতের মাড়ি ও নাক থেকে রক্ত পড়বে বা কালশিটে দাগ হবে। শরীরে ফুসকুড়ি হবে, শিশু বমি করবে, কিছুটা বড় শিশুদের ক্ষেত্রে আরও কিছু লক্ষণ দেখা যেতে পারে। প্রচÐ জ্বর হবে যেটা যাওয়া আসার মধ্যে থাকবে, চোখের পেছনে ব্যথা হবে, চোখের মণি নাড়াচাড়া করতে গেলে এই ব্যথা অতিরিক্ত বেড়ে যাবে, মাংসপেশীতে ব্যথা, হাড়ের জয়েন্টে ব্যথা। প্রচÐ মাথা ব্যথা শিশুর শরীরে লাল এবং সাদা গোল গোল দাগ হয়, দেখতে কিছুটা হামের ফুসকুড়ির মতো।
ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব কিংবা বমি হতে পারে, শিশুর জ্বর হলে যা করবেন। শিশুর মধ্যে যদি লক্ষণ দেখা যায় থাকে তাহলে দ্রæত চিকিৎসা শুরু করুন। প্রাথমিক রোগ নির্ণয় এবং দ্রæত চিকিৎসা ডেঙ্গুর মারাত্মক ঝুঁকি কমাতে পারে। ১২ মাসের কম বয়সী শিশুদের এই রোগ গুরুতর আকার ধারণ করার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই দ্রæত চিকিৎসা না করা হলে ডেঙ্গু থেকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার (উঐঋ) হয়ে যেতে পারে, যার কারণে মৃত্যুও ঘটতে পারে।
শিশুর ডেঙ্গু জ্বর শনাক্ত করবেন যেভাবে: ডেঙ্গু ভাইরাস কোনো ব্যক্তির শরীরে আছে কি না তা জানার জন্য রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ডেঙ্গু ভাইরাসের ৪টি ধরনের মধ্যে কোনটি রয়েছে তাও শনাক্ত করা যায়। ডেঙ্গু ভাইরাসের মতো অন্যান্য ভাইরাসগুলোরও যদি একই ধরনের লক্ষণ দেখা যায় তাহলেও রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ডাক্তার সেটা বের করতে পারবে।
শিশুর ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা: ডেঙ্গুর জন্য নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই, তবে ডাক্তার ডেঙ্গুর লক্ষণ দূর করার জন্য কিছু ওষুধ লিখে দেবেন। যেমন, জ্বর ও শরীরের ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল দেওয়া হয়। ডেঙ্গু হলে আইবুপ্রোফেন (রনঁঢ়ৎড়ভবহ) এর মতো ব্যথার ওষুধ দেবেন না। কারণ ডেঙ্গু হলে রক্তে প্লেটলেটের সংখ্যা কমে যায় এবং এর ফলে রক্তপাত হতে পারে। আইবুপ্রোফেন এবং অন্যান্য ব্যথার ওষুধও রক্তে প্লেটলেটের মাত্রা কমিয়ে দেয়। তাই ডেঙ্গু আক্রান্তকে এই ওষুধ দিলে মারাত্মক হতে পারে।
ডেঙ্গু হলে যা করবেন: শিশুকে প্রচুর বিশ্রাম নিতে দিন, শিশুকে ঘনঘন বুকের দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করুন যেন তার ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা না হয়। ৬ মাসের কম বয়সী শিশুদের শুধু বুকের দুধ বা ফর্মুলা খাওয়াবেন। ৬ মাস বা তার বেশি বয়সী শিশুরা পানি পান করতে পারে। প্রয়োজন অনুযায়ী, ডাক্তার তাকে রিহাইড্রেশন তরলও সুপারিশ করতে পারেন। সলিড ফুড খাওয়াতে পারবেন তবে সেটা যেন হালকা ও পুষ্টিকর হয়। ডেঙ্গুর লক্ষণ সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিনের মতো থাকে, তবে কেউ কেউ ১ মাস পর্যন্ত ক্লান্তি বোধ করতে পারে। কখন গুরুতর হতে পারে, ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার (উঐঋ) হলে রোগীর মৃত্যু ঝুঁকিও তৈরি হয়। জ্বর কমে যাওয়ার প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি শিশুর অবস্থা খারাপ হয়ে যায় বা বমি শুরু হয় তাহলে দ্রæত তাকে হাসপাতালে বা জরুরি বিভাগে যান।
ডেঙ্গু গুরুতর আকার ধারণ করলে নিচের লক্ষণগুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, দাঁতের মাড়ি, নাক দিয়ে রক্ত পড়বে/বমি ও পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাবে/প্রতিদিন ৩ বার বা তার বেশিবার ক্রমাগত বমি হবে/শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রæত হবে/শরীর ঠাÐা ও আঠালো থাকবে/প্রচÐ পেটে ব্যথা হবে/ক্লান্তি ও অস্থিরতা বোধ করবে/তন্দ্রা বা অচেতন হয়ে যাবে/লিভার বড় হয়ে যাবে। গুরুতর ডেঙ্গু হলে শরীরে মারাত্মক জটিলতার সম্ভাবনা তৈরি হয়। ডেঙ্গু প্রধানত অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, প্লাজমা লিকেজ, ফুসফুসের আবরণী পর্দায় পানি জমা হওয়া এবং শ্বাসকষ্টের কারণে গুরুতর আকার ধারণ করে। ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুর অবস্থা বেশি খারাপ হলে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এবং কখনো কখনো থেরাপির প্রয়োজন হতে পারে। প্রাথমিকভাবে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার (উঐঋ) শনাক্ত করা হলে, এর কার্যকরী চিকিৎসা করা সম্ভব।
শিশু সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাকে খুব ভালোভাবে দেখেশুনে রাখতে হবে। সবসময় অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে।
শিশুর একবার ডেঙ্গু হয়েছে, দ্বিতীয়বার কি আক্রান্ত হতে পারে, ডেঙ্গুর ৪টি ধরন। কেউ যদি একবার কোনো এক ধরনের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় তবে পরবর্তীতে আক্রান্তের শরীরে সেই নির্দিষ্ট ভাইরাস প্রতিরোধের ক্ষমতা তৈরি হতে পারে। কিন্তু অন্য ৩ টি ধরনের ভাইরাস আক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়। শিশু যদি একবার আক্রান্ত হওয়ার পর ভবিষ্যতে অন্য তিনটি ডেঙ্গু ভাইরাসের কোনো একটিতে আবারও আক্রান্ত হয় তবে অসুস্থতা আরও মারাত্মক হয়ে উঠবে। সন্তানকে ডেঙ্গু থেকে রক্ষা করার সব থেকে বড় উপায় হলো ডেঙ্গু মশার কামড় থেকে তাকে রক্ষা করা। মশা যেন কামড় দিতে না পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।
ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে করণীয়: মশা জমে থাকা পানিতে বংশবিস্তার করে। তাই বাড়িতে বা আশেপাশের এলাকা যেন পরিষ্কার থাকে এবং কোথাও কোনো স্থির বা ময়লা পানি যেন জমে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। কোনো পানিতে গাছপালা পচে আছে কি না খেয়াল রাখুন। ডেঙ্গুর ঝুঁকি কমাতে যা করতে পারেন। সন্তানের বয়স উপযোগী ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই এমন মশা নিরোধক খুঁজে বের করুন (যেমন: অ্যারোসল স্প্রে, মসকিটো রেপেলেন্ট বা মশা নিরোধক ক্রিম, কয়েল ইত্যাদি)। বিশেষ করে বর্ষাকালে অনেক বেশি সতর্ক থাকুন। এ সময়টায় চারিদিক ভেজা ও স্যাঁতস্যাঁতে থাকে, তাই ডেঙ্গু মশার প্রকোপও বেড়ে যায়।
মশারি টানানোর অভ্যাস করুন, বাংলাদেশের মত দেশে বেশিরভাগ জমা পানির জায়গা হলো কনস্ট্রাকশন বা বাড়িঘর/রাস্তাঘাট বানানোর জায়গা। তাই ঢাকাবাসীর আসলে মশা প্রতিরোধে ব্যক্তি পর্যায়ে তেমন কিছু করার নেই। কয়েল বা মশা নিরোধক স্প্রে শিশুর জন্য বেশ ক্ষতিকরও। তাই এগুলো ব্যবহারেও বেশ সতর্ক থাকতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরের কি কোনো টিকা আছে, ডেঙ্গুর একটি টিকা আছে কিন্তু তা এখনো আমাদের দেশে পরীক্ষা করা হয়নি। তাই ডেঙ্গুর কোনো টিকা এখনো বাংলাদেশে দেওয়া শুরু হয়নি। এছাড়াও ডেঙ্গুর টিকাটি ৯ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য উপযুক্ত নয়। ডেঙ্গু সতর্কতায় যেকোনো প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
সূত্র : পারমিতারপ্রতিদিন.কম