প্রযুক্তি গবেষকরা বলছেন, বিশ্বে এআই ব্যবহারের ফলে ৩০ কোটি অদক্ষ শ্রমিক কর্মসংস্থান হারাবে
এস.ইসলাম জয় : সারা বিশ্বেই এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এ আই নিয়ে নাগরিকদের ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সেইসাথে আশঙ্কাও বিরাজ করছে। এরমধ্যেই ভারতের উড়িষ্যা এবং বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যা অবিকল মানুষের ন্যায় সংবাদ পাঠ করে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
সোমবার বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানানো হয়।
বিশেজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করছেন এআই’র অপব্যবহার হতে পারে ব্যাপকভাবে। তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমাতার ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি গাইডলাইন থাকা আবশ্যক বলে মনে করে গ্রাহক স্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রযুক্তির বিশ্বে কেউ কেউ একে আশীর্বাদ বললেও আইএলও এবং প্রযুক্তি গবেষকদের কেউ কেউ বলছেন সারা বিশ্বে এআই ব্যবহারের ফলে ৩০ কোটি অদক্ষ শ্রমিক কর্মসংস্থান হারাবে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) হিসাব বলছে, ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, আসবাবপত্র তৈরি, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, পর্যটন ও চামড়াশিল্প -এই পাঁচটি খাতে প্রায় ৫৪ লাখ মানুষ কাজ হারাবে।
শুধু শ্রমঘন তৈরি পোশাক শিল্পের ৬০ শতাংশ শ্রমিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রযুক্তি কারণে বেকার হয়ে পড়বে। কৃষি ক্ষেত্রে এই হার হবে অন্তত ৪০ শতাংশ। আবার কেউ কেউ মনে করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার করে অবিকল রাষ্ট্রের শীর্ষ স্থানীয় ব্যক্তিদের বা শীর্ষ রাজনীতিবিদ আবার হতে পারে কোন বিশিষ্ট নাগরিকের অবিকল অবয়ব সৃষ্টি করে দেশে নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যদি প্রধানমন্ত্রীর অবয়ব সৃষ্টি করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে কোন একটি ঘোষণা দিচ্ছে, বা রাজনৈতিক সহিংসতা সৃষ্টি করার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের সৃষ্টি করে কোন ঘোষণা দিচ্ছে, তখন দেশে কি ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে তা একবার ভেবে দেখা দরকার। আবার ধরা যাক শ্রমিক অসন্তোষের কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলি পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই কিংবা তার শ্রমিকদের প্রযুক্তিবান্ধব প্রশিক্ষণ না দিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে উৎপাদন শুরু করল। ফলে লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ল। কিন্তু যদি একটি গাইডলাইনে নির্দেশনা থাকতো যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শুরুর পূর্বে তাকে অবশ্যই অনুমোদন এবং তার শ্রমিকদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে কাজ করার সক্ষমতা তৈরি করবেন। তাহলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে একদিকে উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি পাশাপাশি দক্ষ প্রযুক্তিবান্ধব শ্রমিক তৈরি হতো।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিজে পরিচালিত হতে পারে না সে কেবল তথ্য গ্রহণের মাধ্যমে কাজ করে থাকে এবং সেই কাজটি মানুষ দ্বারাই পরিচালিত হয়। তাই প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে এবং শিল্প কারখানায় দক্ষ প্রযুক্তিবান্ধব শ্রমিক গড়ে তোলার পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা প্রনয়ন করা আবশ্যক বলে আমরা মনে করি।