![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)
খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কিছু কি আছে বাংলাদেশের!
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/uploads/2023/07/neil-re-2-400x264.png)
নিল রে
বø্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ (বিএসজিআই) থেকে রাশিয়ার প্রস্থানের পর ভারত সুগন্ধি বাসমতি ছাড়া সব ধরনের চাল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যদি দুটি যুদ্ধরত দেশ ইউরোপ, আফ্রিকা এবং আমেরিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চাল না খাওয়া মানুষের জন্য প্রধান খাদ্য গমের সিংহভাগের গম উৎপাদন ও রপ্তানি করার জন্য দায়ী হয় তাহলে বিশ্বের অনেক অংশে প্রধানত এশিয়া এবং ল্যাটিন আমেরিকার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর প্রধান খাদ্য হল ভাত। রাশিয়া ঘোষণা করার সাথে সাথে যে কোন জাহাজ কৃষ্ণ সাগর পেরিয়ে ইউক্রেনিয়ান বন্দরগুলোর জন্য আবদ্ধ বা ছেড়ে যাবে তা যুদ্ধ জাহাজ হিসাবে বিবেচিত হবে, ইউক্রেন থেকে খাদ্য সরবরাহের শৃঙ্খলা মারাত্মকভাবে বিকল হয়ে যাবে। শস্য চুক্তি বাতিলের পর আমেরিকা এবং ইউরোপে তার মিত্রদের রাশিয়ার উপর আরও নিষেধাজ্ঞাগুলো সেই দেশের খাদ্য ও সার রপ্তানিকেও ব্যাহত করবে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকাতে যে দুটি দেশের খাদ্যশস্যের উপর অত্যধিক নির্ভরশীলতা রয়েছে।
ইউরোপে ইতিমধ্যেই গমের দাম বাড়তে শুরু করেছে। চালের দাম না বাড়ার কোনো কারণ নেই। বিশ্ব বাজারে ৪০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে ভারত শীর্ষ চাল রপ্তানিকারক। অন্যান্য রপ্তানিকারকদের ভারতীয় রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার ফলে শূন্যতা পূরণ করার ক্ষমতা নেই। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, চালের প্রাপ্যতা যাতে ব্যাহত না হয় এবং অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম কম রাখা হয় তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। যা-ই হোক না কেন, বাস্তবতা রয়ে গেছে যে বিশ্ব খাদ্যশস্যের মূল্যের স্ফীতির আরও একটি ভয়ঙ্কর সাক্ষী হতে চলেছে। খাদ্য ঘাটতি দেশগুলোর সরকার এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলো যখন লাখ লাখ মানুষের মুখে খাদ্য সংকট নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, তখন বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করে যে দেশে কোনো খাদ্য ঘাটতির কোনো সম্ভাবনা নেই। খাদ্যমন্ত্রীর দাবি মজুত এতটাই উপচে পড়ছে যে স্টোরেজের জন্য জায়গা তৈরি করতে পুরনো মজুত ব্যবহার করা হচ্ছে তিন মাসের রেশনের জন্য।
পুলিশ, আনসার এবং প্রতিরক্ষা পরিষেবাগুলো রেশনিং ব্যবস্থার সুবিধাভোগী। দেশে সাধারণ রেশনিং ব্যবস্থা নেই। নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির অধীনে, দুর্বল গোষ্ঠীগুলোকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়। তাদেরও কি একবারে তিন মাসের বরাদ্দ দেওয়া হবে? মন্ত্রী প্রকাশ করেন যে বর্তমানে মজুদ রয়েছে ২.০ মিলিয়ন মেট্রিক টন খাদ্যশস্য। বোরো ও আমনের বাম্পার ফলন রেকর্ড করা হয়েছে এবং এর উপরে ১.০৫ মিলিয়ন টন চাল আমদানি হয়েছে, যার মধ্যে ০.৬ মিলিয়ন সরকারী এবং বাকিটা বেসরকারি আমদানিকারকদের। বেসরকারি আমদানিকারকদের ১.৮ মিলিয়ন টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং তারা ইতিমধ্যে ০.৪৫ মিলিয়ন টন আমদানি করেছে। খাদ্যমন্ত্রী যখন এত উচ্ছ¡সিতভাবে তার আশাবাদ ও আস্থা প্রকাশ করেছেন, তখন খাদ্য সচিব একটু ভিন্ন চিত্র তুলে ধরেছেন। তিনি বোরোর ভালো ফলনের কথাও পুনরাবৃত্তি করেন তবে আমন ফলন আমদানির প্রয়োজনীয়তা উড়িয়ে দিতে পারে কিনা তা নিশ্চিত নয়। তিনি আমদানির বিষয়টিকে শর্তসাপেক্ষ করেন। আমন ফসল যদি কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাহলে বাংলাদেশকে কিছু চাল আমদানি করতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে বিকল্প উৎস হবে ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা অনেককেই খাদ্য নিরাপত্তার ব্যাপারে নিশ্চিত করে না। গত বছর ভারত যখন ভাঙ্গা চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছিল, তখন বাংলাদেশের চালের বাজারে এর প্রভাব বেশ বিরূপ হয়েছিল। এটি অতীতেও ঘটেছিল যখন কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছিল যে দেশটি ভারতীয় নিষেধাজ্ঞার দ্বারা প্রভাবিত হবে না কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটিকে অন্যান্য দেশ থেকে আমদানির জন্য এবং স্পষ্টতই অনেক বেশি খরচে উন্মত্তভাবে তাকাতে হয়েছিল। তাহলে পর্যাপ্ত মজুদ দরিদ্র এবং নি¤œ-আয়ের গোষ্ঠীর খাবারের সহজলভ্যতার গ্যারান্টি নয়। আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম বাড়লে, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট দামের মাত্রা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে নিয়ে যাবে সুযোগ পেলেই। যদি পর্যাপ্ত স্টক থাকে তবে নিশ্চিত করুন যে কারসাজির বাজারে নি¤œ আয়ের মানুষ যেন বঞ্চিত না হয়। আবার চালই একমাত্র প্রধান খাদ্য নয়, মানুষের প্রয়োজন গম থেকে মোটা আটা। যদি তা আরও দাম বাড়তে থাকে, তাহলে চালের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। হরষৎধঃধহযধষফবৎ২০০০@ুধযড়ড়.পড়স
সূত্র : দি ফিনানসিয়াল এক্সপ্রেস। অনুবাদ : মিরাজুল মারুফ
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)