![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)
নির্বাচনের আগে শিক্ষকদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য কী?
অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী, পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর: মাউশির পক্ষ থেকে ৩৪ জন শিক্ষক শ্রেণীকক্ষে অনুপস্থিত থাকার কারণে শোকজ করা হয়েছে এবং তাদের চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই আন্দোলনের সঙ্গে শোকজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমরা আমাদের নিয়মিত যে পরিবীক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হয় তারই অংশ হিসেবে জুন মাসের একটি প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এটি করা হয়েছে। এই দুটির মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের দাবি-দাওয়ার সঙ্গে এই শোকজের অন-অনুমোদিত অনুপস্থিতির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমরা জানি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শিক্ষায় জাতীয়করণের পদ্ধতিটি একটি চলমান কার্যক্রম। প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এখন মাধ্যমিক পর্যায়ে বা বিভিন্ন পর্যায়ে স্কুল, কলেজ সরকারিকরণ করা হচ্ছে এবং এটি আমাদের শিক্ষা পলিসিতেও রয়েছে। এটি একটি ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ এবং এখানে যেই দাবির কথা বলা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আছে। একটি সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য এর উপযোগিতা, চ্যালেঞ্জের নানা বিষয় রয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা, আর্থিক সামর্থ্যরে বিষয় রয়েছে। এই জাতীয়করণ আমাদের শিক্ষার মান উন্নয়নের যে রোল প্লে করছে সেটিরও বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে। সেজন্য আমাদের যারা আন্দোলনকারী রয়েছে তাদের বলেছিলাম আপনারা শিক্ষা কার্যক্রম কোনো রকম ব্যহত করবেন না। জাতীয়করণের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নেওয়া হয়েছে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, এটিকে বিচার-বিশ্লেষণ করে কীভাবে এটি বাস্তবায়ন করা যায় ধারাবাহিকভাবে সেজন্য দুটি কমিটি করার কথা রয়েছে।
সামনে নির্বাচন রয়েছে তাছাড়া মহামারির কারণে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম ও শিক্ষর্থীদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয়েছে। আমরা শিক্ষকরা প্রয়োজনে আন্দোলন করবো। কিন্তু সেটা অবশ্যই শিক্ষা কার্যক্রম এবং শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করে নয়। সরকার এটিকে বিবেচনায় নিয়েছেন এবং কীভাবে বাস্তবায়ন করবেন সে ব্যাপারে কথা বলবেন। কিন্তু এ পর্যায়ে আমি মনে করি যে আন্দোলনটি চলছে। এখানে তাদের উচিত হচ্ছে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে শিক্ষায় যে ব্যাঘাত ঘটছে সেখান থেকে সরে আসা। এই প্রক্রিয়াটি চলমান এবং ধাপে ধাপে এটি সম্পন্ন করতে হবে, ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এটি সম্পন্ন হয়ে যাবে না। আমরা সবসময় বলে আসছি রাজনৈতিক কর্মকাÐ চলে আসেছে এখানে দেখা যাবে, এটি আর শিক্ষকদের আন্দোলনের মধ্যে থাকবে না তখন শেষে তারা যে কারণে আন্দোলন করছে সেটি ব্যাহত হবে। এই মুহূর্তে তাদের উচিত সমগ্র পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ কার্যক্রম থেকে সরে এসে সরকারের সঙ্গে যে আলোচনা হচ্ছে সেখানে অংশগ্রহণ করা। আমাদের আপিল হচ্ছে তারা দ্রæত যাতে চলে আসে অন্য রাজনৈতিক ফায়দা কেউ যাতে লুটতে না পারে। তাদের আন্দোলনকে যাতে কেউ অন্য দিকে নিয়ে যেতে না পারে সেটিই আমাদের আপিল এই মুহূর্তে।
শেখ কাউসার আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি: আমাদের এই দাবিটি অনেক দিন আগের। আমরা বিভিন্ন সময় মানববন্ধন করেছি, বিভাগীয় সমাবেশ করেছি। আমরা চাই বৈষম্যহীন শিক্ষা ব্যবস্থা এ দেশে চালু হোক। আমরা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো আন্দোলন করিনি। আপনারা জানেন ৮ মার্চ আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম ২০ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রায় ২ লক্ষাধিক শিক্ষকের সমাবেশ ঘটিয়ে আমরা একটি প্রস্তাব দিয়েছিলাম মাননীয় সরকার প্রধানের কাছে যে বাজেটে জাতীয়করণ নিয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা চাই এবং বরাদ্ধ চাই। সেক্ষেত্রে আমরা দেখলাম বাজেটে এই ব্যাপারে কোনো বরাদ্ধ নেই এবং ক্রমান্বয়ে বাজেট কমেছে। সেক্ষেত্রে আমরা আবারও ঘোষণা দিয়েছি যে বাজেট পাশের পূর্বে যদি ঘোষণা না আসে তাহলে আমরা ১১ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি পালন করবো। আমরা ১৯ বছর আগে উৎসব ভাতা পেয়েছি ২৫ শতাংশ এবং ১৯ বছর আগের উৎসব ভাতা এখনো পরিবর্তন হয়নি। আমরা মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া বাবদ, ৫০০ টাকা চিকিৎসা বাবদ পাই, মূল বেতনের ১০০ শতাংশ পাই। আমরা আন্দোলন শুরু করি ১১ তারিখ থেকে তারপর সরকারি বন্ধ ছিলো এবং আবার ১৬-১৯ তারিখ পর্যন্ত স্কুল খোলা ছিলো এবং তারপর গ্রীষ্মের বন্ধ ছিলো আমরা ভেবেছিলাম এই চার দিনের মধ্যে আমরা শিক্ষক, অভিভাবক সহ সকলের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্তে আসবো। কিন্তু আমরা তা করতে পারিনি।
সূত্র: একাত্তর টিভি।
শ্রæতিলিখন : জান্নাতুল ফেরদৌস
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)