সোহেল রহমান : ডাবল লিফটিং পদ্ধতিতে পদ্মা নদীর পানি বরেন্দ্র এলাকায় সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ভূ-উপরিস্থ এই পানি ব্যবহৃত হবে কৃষি সেচ কাজে, বাড়বে ফসল উৎপাদন। এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে রাজশাহীর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়িতব্য প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪৮ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নে সময়সীমা ধরা হয়েছে ৪৬ মাস (২০২৩ সালে সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত)।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর ও পবা উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
আধুনিক ও টেকসই সেচ ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় ভ‚-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার, সেচের পানির অপচয় রোধ, ভ‚-গর্ভস্থ পানির রিচার্জ/রিজার্ভ বৃদ্ধিসহ বরেন্দ্র এলাকায় সেচ স¤প্রসারণপূর্বক অতিরিক্ত ফসল উৎপাদন করাÑ এ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য। একটি উচ্চ অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে প্রকল্পটি সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে (আরএডিপি)-তে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল।
সূত্র জানায়, ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কৌশলগত উদ্দেশ্যের মধ্যে অন্যতম উদ্দেশ্য শস্য উৎপাদনে সেচের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ভ‚-উপরিস্হ পানির ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে প্রকল্পটি সামঞ্জস্যপূর্ণ। এছাড়া, টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট ২.৪-এ টেকসই খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করা এবং ৬.৪-এ সকল খাতে পানির ব্যবহার দক্ষতার প্রভ‚ত উন্নয়নের সঙ্গেও প্রকল্পটি সংগতিপূর্ণ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পদ্মা নদীর ভ‚-উপরিস্থ পানি পুনঃখননকৃত খালসমূহে সংরক্ষণপূর্বক প্রায় ১০ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে নিয়ন্ত্রিত সেচ সুবিধা স¤প্রসারণের মাধ্যমে এক ফসলি জমিকে তিন ফসলি জমিতে রূপান্তরপূর্বক প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টন অতিরিক্ত ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে। ফলে প্রকল্প এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে এবং প্রকল্পটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করবে বলে মনে করছে সরকার।
প্রকল্পের আওতায় উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেÑ ২৪০ কিউসেক ডিসচার্জ সম্পন্ন ইনটেক পাম্পসহ আনুষঙ্গিক সংগ্রহ ও স্থাপন-১ সেট (৫টি পাম্প); ১২০ কিউসেক ডিসচার্জ সম্পন্ন বুস্টার পাম্প সংগ্রহ ও স্থাপন-২ সেট (৬টি পাম্প); বুস্টার পাম্প স্টেশন নির্মাণ-১ হাজার বর্গমিটার (২টি); ২৫০ মিলিমিটার ব্যাসের ইউপিভিসি পাইপ সংগ্রহ- ১ লাখ ৬০ হাজার মিটার; সোলার কাম বৈদ্যুতিক এলএলপিসহ অন্যান্য সেচ যন্ত্রপাতি সংগ্রহ- ১৬০ সেট; ১ হাজার মিলিমিটার ব্যাসের এম.এস পাইপ সংগ্রহ ও স্থাপন- ৩৭ হাজার মিটার; খাল পুনঃখনন- ১২০ কিলোমিটার (৫৮ লাখ ৯৪ হাজার ৮১০ দশমিক ৩৩ ঘনফুট); বৈদ্যুতিক মালামাল ক্রয়সহ বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ (ফিটিংসহ)- ১২৫ কিলোমিটার এবং ৪ একর ভ‚মি অধিগ্রহণ/ক্রয়।