নৌরুটের সক্ষমতা বাড়াতে মিলছে না বিশ্বব্যাংকের প্রতিশ্রæত ঋণ
অর্থনীতি ডেস্ক : ঢাকা-চট্টগ্রাম-আশুগঞ্জ নৌরুটের সক্ষমতা বাড়াতে একটি প্রকল্প হাতে নেয় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিøউটিএ)। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এরমধ্যে ৩৬ কোটি মার্কিন ডলার বা ২ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা অর্থায়ন করার কথা বিশ্বব্যাংকের। কিন্তু প্রতিশ্রুত অর্থের থেকে প্রায় ১৩ কোটি ডলার কম দিচ্ছে।
করোনার কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন প্রকল্প-১ বাস্তবায়ন শ্লথ হয়ে পড়ে। ফলে বিশ্বব্যাংককে অর্থ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেছিল সরকার। তবে কথা ছিল পরবর্তীতে এই প্রকল্পে প্রত্যাহার করা টাকা সমন্বয় করা হবে। কিন্তু তা আর করেনি বিশ্বব্যাংক। ফলে কাজের কম্পোনেন্ট বা অঙ্গ বাদ দিয়েই প্রকল্প সংশোধনের প্রস্তাব করা হয় পরিকল্পনা কমিশনে।
এই প্রকল্প থেকে ২০২০ সালের এপ্রিলে ১২ কোটি ৬০ লাখ ডলার প্রত্যাহার করে নেয় বিশ্বব্যাংক। ফলে প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের মোট সাহায্য দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডোরের আশুগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও বরিশালে মূল নদী এবং শাখা (প্রায় ৯০০ কিলোমিটার নৌপথ) পারফরম্যান্স বেইজড কন্ট্রাক্ট ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণ এবং নাব্যতা সংরক্ষণ করা হবে। এছাড়া ৬টি স্থানে নৌযানের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, ৩টি ফেরি ক্রসিং এলাকায় সংরক্ষণ ড্রেজিং, ৪টি প্যাসেঞ্জার ও ২টি কার্গো টার্মিনাল নির্মাণ ও উন্নয়ন, ১৫টি ল্যান্ডিং স্টেশন তৈরি এবং দুটি মাল্টিপারপাস ভেসেল সংগ্রহ করা হবে। এ নৌ-করিডোরে নৌযান আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত স্থানগুলো হলো- ষাটনল, চরভৈরবী, চাঁদপুর, মেহেন্দীগঞ্জ, স›দ্বীপ এবং নলচিরা। চাঁদপুর-শরিয়তপুর, ল²ীপুর-ভোলা এবং ভেদুরিয়া-লাহারহাট নৌরুটের ফেরি ক্রসিং এলাকায় সংরক্ষণ ড্রেজিং; ঢাকা শ্মশানঘাট, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর এবং বরিশালে প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণ ও উন্নয়ন এবং পানগাঁও ও আশুগঞ্জে কার্গো টার্মিনাল নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া ভৈরব বাজার, আলু বাজার, হরিণা, হিজলা, মজুচৌধুরী, ইলিশা, ভেদুরিয়া, লাহারহাট, বদ্দারহাট, দৌলতখাঁ, চেয়ারম্যান ঘাট (চর বাটা), স›দ্বীপ, তজুমদ্দিন, মনপুরা এবং তমুরুদ্দিনে ল্যান্ডিং স্টেশন নির্মাণ এবং ২টি মাল্টিপারপাস ভেসেল সংগ্রহ করা হবে বলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ নৌ করিডোর এবং নারায়ণগঞ্জ ও বরিশালের বর্ধিতাংশকে অভ্যন্তরীণ এবং ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও অগ্রাধিকার রুট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ অভ্যন্তরীণ নৌযান ও করিডোরের মধ্যদিয়ে চলাচল করে। দৈনিক প্রায় দুই লাখ যাত্রী এসব জলপথ ব্যবহার করে। যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করার ক্ষেত্রে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, আশুগঞ্জ, চাঁদপুর এবং বরিশাল অভ্যন্তরীণ নদী টার্মিনালগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করছে।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়, প্রাথমিকভাবে বিআইডবিøউটিএ ও বিশ্বব্যাংকের আইডিএ ফান্ডের সহায়তায় তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়। ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুনে বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছিল প্রকল্পের। ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। সূত্র : জাগোনিউজ