ডিএসইতে সাড়ে ৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন শেয়ারবাজারে লেনদেনের খরা কাটছে না
মাসুদ মিয়া: দেশের শেয়ারবাজারের লেনদেনের খরা কাটছে না। গতকাল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ডিএসইতে প্রায় সাড়ে চার মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ লেনদেন হয়েছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৮০ কোটি ৬৬ লাখ টাকার। এর আগে চলতি বছরের ২৯ মার্চ ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৩৮২ কোটি টাকা। একই সঙ্গে লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। একই সঙ্গে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে ।
এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন। এখন দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন যাবত পতনের ধারায় রয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। একদিন বাড়লেও দুইদিন কমে সেই সঙ্গে শেয়ারবাজারে লেনদেন খরা হচ্ছে। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা অস্থিরতা বেড়েছে। সেকারনে শেয়ারবাজারে প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থার অভাব রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক আতঙ্কে পড়েছে। এই আতঙ্কের কারনে শেয়ার বিক্রির মহোৎসবে মেতেছেন বিনিয়োগকারীরা। শেয়ারবাজারের এ দরপতন সম্পর্কে বিনিয়োগকারী জামান বলেন, বাজার ভালো দেখে নতুন করে কিছু টাকা ঢুকিয়ে ছিলাম। একটি কোম্পানির শেয়ার দাম কয়েকদিন ধরে বাড়ছিল। যে কারণে কোম্পানিটর শেয়ার কিনেছি। কিন্তু আমি কেনার পর থেকেই দাম কমতে শুরু করেছে।
গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ায় কয়েক মিনিটের মধ্যে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। ফলে লেনদেনের ৪০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ১৪ পয়েন্ট পড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া দরপতনের ধারা অব্যাহত থাকে শেষ পর্যন্ত। তবে লেনদেনের শেষ দিকে এসে কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ে। এতে পতনের হাত থেকে রক্ষা পায় প্রধান সূচক। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে মাত্র ৭২ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৪টির। আর ১৬৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স দশমিক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৯৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৯৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৪২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
মূল্যসূচকের মিশ্র প্রবণতার দিনে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৮০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪১৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৩৮ কোটি ২১ লাখ টাকা। লেনদেন শুধু আগের দিনের তুলনায় কমেনি, চলতি বছরের ২৯ মার্চের পর ডিএসইতে সর্বনি¤œ লেনদেন হয়েছে। ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৩ কোটি ৬৮ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ২৩ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২০ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এমারেল্ড অয়েল, সোনালী পেপার, দেশবন্ধু পলিমার, রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্স, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, লিগাসি ফুটওয়্যার এবং আরডি ফুড।
দরবৃদ্ধিরশীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানিহলো:-আরামিটলি:, এনটিসি, অ্যাম্বী ফার্মা, এমারেল্ডঅয়েল, রূপালীলাইফইন্স্যুরেন্স, পিপলসইন্সুরেন্স, প্রিমিয়ারসিমেন্ট, পপুলারলাইফইন্স্যুরেন্স, ইসলামিইন্সুরেন্স ও রংপুরফাউন্ড্রি। দরকমারশীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানিহলো:- দেশ বন্ধু পলিমার,খান ব্রাদার্স পিপি, জুটস্পিনার্স, মেঘনাপিইটি, সিএপিএমআইবিবিএলমি. উা., ইয়াকিনপলিমার, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, লিব্রাইনফিউশন, নরদার্নজুট ও সিএনএ টেক্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৬৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৪টির এবং ৬৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।