সাউথইস্ট ব্যাংকের অনিয়ম তদন্তে কমিটি করেছে বিএসইসি
আমিনুল ইসলাম : সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালকদের বিরুদ্ধে ওঠা সুবিধাভোগী লেনদেন বা ইনসাইডার ট্রেডিংয়সহ নানান অভিযোগ খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরই ধরাবাহিকতায় ব্যাংকটির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মো. ফারুক হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে স¤প্রতি এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। গঠিত তদন্ত কমিটিকে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য ৬০ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আলোচিত কমিটি পরিচালকদের সুবিধাভুগী শেয়ার লেনদেনের বাইরেও তাদের ধারণকৃত প্রকৃত শেয়ার সংখ্যা, ঋণ, বিনিয়োগ ইত্যাদি খতিয়ে দেখবে।
তথ্য মতে, ব্যাংকটির কর্তৃত্ব নিয়ে ২০২১ সালে পরিচালকরা দুটি গ্রæপে বিভক্ত হয়ে প্রবল বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। পারস্পরিক বিরোধে বের হয়ে আসতে থাকে ব্যাংকটির নানা অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা। গ্রæপ দুটি একে অন্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলতে থাকেন। ২০২১ সালে ওই সময় ব্যাংকটির পাঁচ প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ পাচারের অভিযোগ তোলেন। তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরকে একটি চিঠিও পাঠিয়েছিলেন। চিঠিতে বলা হয়েছিলো, চেয়ারম্যানের দুর্নীতি, জালিয়াতি এবং অর্থপাচারের কারণে ব্যাংকের আমানত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। পরিচালকদের মধ্যে ছিলেন, ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ কাশেম, আজিম উদ্দিন আহমেদ, দুলুমা আহমেদ, ব্যাংকের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান, রেহানা রহমান এবং জুসনা আরা কাশেম।
বাংলাদেশের প্রথম বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিশোধন কেন্দ্র পরিদর্শনে এডিবি’র নির্বাহী পরিচালক
মো. আখতারুজ্জামান : এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এর সম্মানিত নির্বাহী পরিচালক সমীর কুমার খারে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) এর প্রকল্প পরিচালক (সিআরডিপি-২) হামিদুল হক, এডিবির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) প্রতিনিধিরা, যশোর পৌরসভার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান স্কেইট ওয়েস্ট দ্বারা পরিচালিত অত্যাধুনিক ইন্টিগ্রেটেড ল্যান্ডফিল এবং রিসোর্স রিকোভারি ফ্যাসিলিটি পরিদর্শন করেছেন।
দ্য স্কেইট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. নাহিদ আলম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এবং টিম স্কেইট এর সকল সদস্য উপস্থিত থেকে সম্মানিত অতিথিরা এবং মিডিয়াকর্মীদের সাথে এই উদ্যোগের তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। অভিজ্ঞতা বিনিময় পর্বে স্কেইট ওয়েস্ট এর চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন যে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং একটি প্রক্রিয়া, এই প্রক্রিয়াকে লাভজনক ও সাসটেইনেবল করার জন্য প্রত্যেকের কার্যকরী অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা প্রয়োজন। আধুনিক প্রযুক্তি সংযোগ এবং সহযোগিতার মাধ্যমে প্ল্যান্টের উৎপাদন ও বর্জ্য পরিশোধনের পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলা সম্ভব।
এডিবির নির্বাহী পরিচালক সমীর কুমার খারে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় স্কেইট ওয়েস্টের উদ্ভাবনী পদ্ধতি ও উদ্যমের জন্য সাধুবাদ জানান। তিনি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতার তাৎপর্যের ওপর জোর দেন এবং রিসোর্স রিকোভারি ফ্যাসিলিটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির প্রশংসা করেন। এছাড়াও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সাথে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে গুরুত্বারোপ করে বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য এবং পরিবেশের জন্য বিরাট হুমকি। আমরা যদি এখানে মানুষের সরাসরি অংশগ্রহণ কমিয়ে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার মত আধুনিক প্রযুক্তির সংযোগ ঘটাতে পারি, তাহলে আমরা দ্রæত একটি কার্যকরী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা ও রোল মডেল গড়ে তুলতে পারব।
যশোরের ঝুমঝুমপুর নড়াইল-ঢাকা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত উন্নত বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ ও ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্টটি বেসরকারি সংস্থা স্কেইট ওয়েস্ট দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে, যেটি বাংলাদেশের প্রথম ও অগ্রণী উদ্যোগ। এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিশোধন কেন্দ্রটি ১৩.৯৭ একর জমির উপর অবস্থিত। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্পের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত হয়। ২০১৯ সালের আগস্ট মাস থেকে বর্জ্য পরিশোধন ও প্রক্রিয়াকরণ কার্যক্রম শুরু হয়।
বর্তমানে এই প্ল্যান্টে যশোর শহরের পৌর বর্জ্য থেকে উন্নত মানের জৈব সার প্রস্তুত হচ্ছে যা দেশের কৃষিখাতে এবং নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করছে। পচনশীল বর্জ্য থেকে উৎপন্ন হচ্ছে নবায়নযোগ্য শক্তি বায়োগ্যাস ও ইলেক্ট্রিসিটি যা বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্ল্যান বাস্তবায়নে সহযোগী ভ‚মিকা পালন করছে। এছাড়াও দেশের একমাত্র পরিকল্পিত পরিবেশবান্ধব ল্যান্ডফিল এখানে অবস্থিত। এই প্লান্টে আরো রয়েছে পানি পরিশোধন ইউনিট ও পয়োবর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র।
উল্লেখ্য- স্কেইট ওয়েস্ট একটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কোম্পানি পরিবেশ দূষণ মোকাবেলা এবং ক্রমবর্ধমান বর্জ্য সমস্যার সমাধানে তারা স্কেইট ওয়েস্ট প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে যশোর পৌরসভার ইন্টিগ্রেটেড ল্যান্ডফিল এবং রিসোর্স রিকভারি ফ্যাসিলিটি স্কেইট ওয়েস্ট’র ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে।