খুচরা বাজারে ডিম ১২ টাকার বেশি রাখলেই প্রতিষ্ঠান বন্ধের হুমকি ভোক্তা ডিজি’র
আমিনুল ইসলাম : [১] খুচরা বাজারে ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের থেকে প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকার বেশি রাখতে পারবেন না বলে জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। গত সোমবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে ডিমের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে ডিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, এজেন্ট, ডিলার ও খুচরা-পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় এ হুঁশিয়ারি দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডিজি এএইচএম সফিকুজ্জামান।
[২] সফিকুজ্জামান বলেন, খামার পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ৫০ পয়সা। প্রতি ডিমে পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের লাভ দেড় টাকা ধরে খুচরা পর্যায়ে ডিমের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন থেকে খুচরা বাজারে ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের থেকে প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকার বেশি রাখতে পারবেন না। নতুন দামে ডিম বিক্রি খুচরা ব্যবসায়ীদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলেও জানান সফিকুজ্জামান।
[৩] তিনি বলেন, ভোক্তাদের কাছে এই দামের মধ্যে ডিম বিক্রির বিষয়টি কঠোরভাবে তদারকি করা হবে। এ ছাড়া নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রির বিষয়টি মনিটরিংয়ের জন্য অভিযান শুরু হবে। এছাড়া থেকে হাতবদলের প্রতিটি স্তরে পাকা ভাউচার বা রসিদ বাধ্যতামূলক করতে হবে। সেটি কিন্তু আমাদের আইনি বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তা মেনে না চললে আমরা এখন শুধু আর কোনো প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করব না, সেই প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধ করে দেব। খুচরা ব্যবসায়ীদের অবশ্যই উৎপাদক ও পাইকারি বিক্রেতাদের থেকে ডিম কেনার রসিদ সংগ্রহ করে দোকানে রাখতে হবে। এখন থেকে রসিদ ছাড়া ডিম বিক্রি করতে দেয়া হবে না।
[৪] সভায় উপস্থিত প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক ডা. শাহীনুর আলম বলেন, পোলট্রি শিল্প রক্ষায় সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। খামার পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই দামকে ন্যায্যমূল্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, খুচরা পর্যায়ে মুরগির ডিমের দাম কোনোভাবেই ১২ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। দেশের পোলট্রি শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পথে খামারিদের অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের উপসচিব আনোয়ার হোসেন বলেন, সরকার এখনই ডিম আমদানির পক্ষে নয়। এতে ক্ষুদ্র ও বৃহৎ সব ধরনের খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। খামারিদের সমস্যা সমাধানে সরকারের উদ্যোগে পোলট্রি বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
[৫] জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, চালান রসিদ প্রদর্শন করা বাধ্যতামূলক। ভোক্তা অধিকার ব্যবসাবান্ধব, ব্যবসায়ীবান্ধব না। ভোক্তা শোষিত হলে ভোক্তা অধিকার ব্যবস্থা নেবে। এফবিসিসিআইয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহ আব্দুল খালেক বলেন, এফবিসিসিআই ভোক্তা, উৎপাদক ও ব্যবসায়ী সবার স্বার্থ রক্ষা করে। তবে বেচাকেনার রসিদ দেয়ার ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের আগ্রহের ঘাটতি রয়েছে। আইন না মানলে সরকার ব্যবস্থা নেবে। এ ব্যাপারে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়।
[৬] ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আহমেদ একরামুল্লাহ পাকা রসিদ ছাড়া ডিম বেচাকেনা বন্ধের আহŸান জানান। তিনি বলেন, খুচরা বাজারে নির্ধারিত ১২ টাকা মূল্যে ডিম বিক্রি নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে। ভোক্তাদের স্বার্থে প্রয়োজনে ডিম আমদানির অনুমতি দিতে হবে।