নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহে প্রস্তাবিত প্রক্রিয়া দ্রæত বাস্তবায়নে ভারতের প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রীর আহবান
সোহেল রহমান : [১] ভারত থেকে বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত প্রক্রিয়া দ্রæত বাস্তবায়নের জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি।
[২] শুক্রবার ভারতের জয়পুরে অনুষ্ঠিত জি-২০ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রীদের সভার পূর্বে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল-এর সঙ্গে সাইডলাইনে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে দেশটির প্রতি এ আহবান জানিয়েছেন বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
[৩] ভারত থেকে বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের প্রক্রিয়া প্রণয়নে অগ্রগতি ও প্রস্তাবিত ব্যবস্থার দ্রæত বাস্তবায়নের জন্য ভারতীয় বাণিজ্যমন্ত্রীর ক্রমাগত সমর্থন কামনা করে বণিজ্যমন্ত্রী বলেন, স¤প্রতি ভারত সরকার কর্তৃক পিঁয়াজের ওপর ৪০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করায় বাংলাদেশে পিঁয়াজের দামের উপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
[৪] এ বিষয়ে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পীযূষ গোয়েল বলেন, বিশ্বব্যাপী উৎপাদনে ব্যাঘাত, সরবরাহের ঘাটতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট অসুবিধাগুলি কাটিয়ে ওঠতে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। প্রতিক‚ল আবহাওয়া ও খাদ্য মূল্যস্ফীতির কারণে ভারতও কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন ঘাটতিতে ভুগছে। এ কারণে ভারত সরকারকে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তিনি বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করে বলেন, ভারত খুব শিগগরিই এ সঙ্কট কাটিয়ে ওঠতে সক্ষম হবে। [৫] বৈঠকে, বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের উপর থেকে এন্টি ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য ভারত সরকারের প্রতি অনুরোধ জানালে পীযূষ গোয়েল বিষয়টি সর্বোচ্চ বিবেচনার আশ্বাস দেন।
[৬] এছাড়া, অন্যান্য দ্বি-পাক্ষিক ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী দুই মাসের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রæপের বৈঠকে উপস্থাপন এবং এগুলো নিষ্পত্তি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
[৭] ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী জি-২০ মন্ত্রী পর্যায়ের ঘোষণা চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মূল্যবান অবদানের প্রশংসা করে বলেন, ভারত সবসময় বাংলাদেশের সঙ্গে বিশেষ বন্ধুত্ব ও অংশীদারিত্বকে মূল্যায়ন করে থাকে।
[৮] বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী জি-২০-এর প্রেসিডেন্সি হওয়ায় ভারতকে অভিনন্দন জানান এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ফোরামে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশকে অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
[৯] ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি সৌদি আরবের বাণিজ্যমন্ত্রী এমই মাজিদ আল কাসাবি-এর সঙ্গে একটি দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করেন। এ সময় দিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আসন্ন বৈঠক ফলপ্রসূ হবে বলে উভয় মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
[১০] এর আগে গত ২৪-২৫ আগস্ট জয়পুরে অনুষ্ঠিত জি-২০ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রীদের সভায় অংশ নেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি।
[১১] ওই সভায় প্রদত্ত বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশসহ গ্র্যাজুয়েশন ট্র্যাকে থাকা দেশগুলোকে ২০২৬ সালের পর এলডিসি দেশসমূহের জন্য প্রযোজ্য শুল্কমুক্ত কোটা মুক্ত বাজার সুবিধা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে সমর্থন প্রদানের জন্য জি-২০ সদস্যদের প্রতি আহŸান জানান।
[১২] এছাড়া আগামী বিশ^বাণিজ্য সংস্থার আগামী ১৩তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে এলডিসি থেকে উত্তরণপ্রাপ্ত দেশগুলোর পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্যও জি-২০ দেশের মন্ত্রীদের অনুরোধ জানান তিনি।