সোহেল রহমান : [১] সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআর-এর ভ্যাট বিভাগের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ)-এর আওতায় সমাপ্ত অর্থবছরে মূসক আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। সে হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার ৯১ দশমিক ৩ শতাংশ মূসক আদায় হয়েছে।
[২] এনবিআর সূত্রে জানা যায়, সমাপ্ত অর্থবছরে ডলার সংকটসহ বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে শ্লথগতি ছিল। এ কারণে আমদানি পর্যায়েও ভ্যাট আশানুরূপ আদায় হয়নি। তবে ভ্যাট বিভাগের নিরীক্ষা কার্যক্রম, জরিপ, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তিসহ অন্যান্য কার্যক্রমে বিশেষ প্রচেষ্টানির্ভর কার্যক্রমে বেশি জোর দেয়া হয়েছে।[৩] পর্যালোচনায় দেখা যায়, ভ্যাট বিভাগের সঙ্গে ১৯টি বিষয়ে এপিএ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছেÑ রাজস্ব আদায়, প্রশিক্ষণ, নতুন করদাতা, গোয়েন্দা কার্যক্রম, রাজস্ব মামলা, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি, রিটার্ন দাখিল, ইলেকট্রনিক ফিসকেল ডিভাইস (ইএফডি) স্থাপন ইত্যাদি।
[৪] এনবিআর-এর ভ্যাট বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জরিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে ৩০ হাজার প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধন দেয়ার লক্ষ্য ছিল। এর বিপরীতে ৭২ হাজার ৭৫৩টি প্রতিষ্ঠানকে জরিপ কার্যক্রমের আওতায় ভ্যাট নিবন্ধন দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে লক্ষ্যের আড়াই গুণ বেশি নিবন্ধন দেয়া হয়েছে।
[৫] অভিযোগ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে ভ্যাট আদায়ে ৫০০টি মামলা করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এর বিপরীতে মামলা করা হয়েছে ১ হাজার ৯৬৮টি। সারা বছরে ২২টি বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি করার কথা ছিল, এর বিপরীতে মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে ২৯টি।
[৬] ভ্যাট বিভাগের আরেকটি কাজ হলো প্রতিষ্ঠানগুলো নিরীক্ষা করা। গত অর্থবছরে ২০০টি প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট বিভাগের নিরীক্ষার আওতায় আনার কথা ছিল। এর বিপরীতে ৯১৭টি প্রতিষ্ঠানকে নিরীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। নিরীক্ষা করে ৫০ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটনের কথা ছিল এ ক্ষেত্রে আদায় হয়েছে ২ হাজার ১১১ কোটি টাকা।
[৭] বকেয়া ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৫ কোটি টাকা; এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৬১৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
[৮] গত কয়েক বছর ধরে ভ্যাটের ইএফডি মেশিন বসানো নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। গত অর্থবছরে সাড়ে ৯ হাজার ভ্যাট মেশিন বসানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর বিপরীতে এ পর্যন্ত বসানো হয়েছে ৯ হাজার ৫৬২টি ভ্যাট মেশিন। এ ছাড়া ভ্যাট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হয়েছে।