আমিনুল ইসলাম: [১] ভারতের হায়দ্রাবাদের যশোদা হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় বাংলাদেশি গৃহবধূ ফারহানা আক্তার ডিনার মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিচারের দাবি করেছেন তার স্বামী ও সন্তানেরা।
[২] শনিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্বামী আল আমিন আল মামুন এ দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে তার দুই মেয়েও উপস্থিত ছিলেন।
[৩] সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তার স্ত্রী বাম কাঁদের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। দেশের বড় বড় অর্থোপেডিক্স চিকিৎসদের দেখানোর পরও তার ব্যাথা নিরাময় করতে পারেনি। অবশেষে ভারতের যশোদা হাসপাতালের একজন নিউরোলজি ডাক্তারের এপোয়েন্টমেন্ট নেওয়া হয়। পরে গত ২০ জুলাই স্ত্রীকে নিয়ে হায়দ্রাবাদে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করি। তিনি অন্য একজন অর্থোপেডিক্স বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার্ড করেন। ওই চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অপারেশনের পরামর্শ দেন। পরীক্ষায় মোট ৭০ হাজার রুপি খরচ হয়। পরীক্ষায় ধরা পড়ে তার বাম কাধের জয়েন্টের হাড় বেড় গেছে। এজন্যই হাত উচু করতে পারছেন না। অর্থোপেডিক্স চিকিৎসক ডা. সুনিল তার স্ত্রীর সার্জারি করার পরামর্শ দেন। এসময় তার স্ত্রী অ্যান্টিবায়োটিক এলার্জি থাকার কথা বলা হয়। কিন্তু তার সেই কথার কর্ণপাত না করেই অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেন তারা।
[৪] এরপর গত ২৮ জুলাই বেলা ১২টার দিকে অপারেশনের জন্য ভর্তি করানো হয়। সাড়ে ১২টার দিকে প্রি-অপারেশনের জন্য রুমে নেওয়া হয়। এরপর তাকে জানানো হয়, এনেস্থিসিয়া পুশ করার পর তা রিয়েক্ট করেছে। তবে তিন চার ঘণ্টার মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে। তার তিন থেকে চার ঘণ্টা পর আইসিইউতে গিয়ে দেখতে পাই আমার স্ত্রীর শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে আছে এবং অচেতন। এসময় তাকে জানানো তার স্ত্রীর ব্রেইন ৯৫ শতাংশ ডেড হয়ে আছে। এসময় হাউ মাউ করে কান্নাকাটি করলে তারা বলেন আপনার স্ত্রী সুস্থ হয়ে উঠবেন।
[৫] এরপর গত ২৯, ৩০ ও ৩১ জুলাই পর্যন্ত আমাকে অপেক্ষায় রাখা হয় যে তিনি সুস্থ হবেন। কিন্তু তিনি সুস্থ না হলে গত ৩১ তারিখে লিগ্যাল অ্যাকশনে যাওয়ার পরিকল্পনা করি। গত ১ আগস্ট ভোর ৫ টার দিকে আমাকে আইসিইউ এর ভেতরে ডাকা হয়। সেখানে গিয়ে দেকি ৩ জন সিস্টার আমার স্ত্রীর হার্টের অনবরত পান্স করছেন। এরপর ৫টা ৫৫ মিনিটের সময় তিনি মারা যান। গত ২ আগস্ট তার লাশ নিয়ে দেশে আসি।
[৬] সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন তার স্ত্রী ফারহানা আক্তার ডিনাকে ভুল চিকিৎসায় হত্যা করা হয়েছে। তিনি এজন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।