নিষেধাজ্ঞার পর কাপ্তাই হ্রদ থেকে প্রথম দিন ১২৪ মেট্রিক টন মাছ আহরণ
আব্দুর রহিম : [১] চার মাস ১২ দিন নিষেধাজ্ঞার পর কাপ্তাই হ্রদে গত শুক্রবার থেকে মাছ আহরণ শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে ১২৪ মেট্রিক টন মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়েছে। এসব মাস থেকে ২৫ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে বলে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) জানিয়েছে। চলতি মৌসুমে দেরি করে বৃষ্টি হওয়ায় সবচেয়ে দীর্ঘ সময় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল।
[২] গত শুক্রবার সকাল থেকে জেলেরা দল বেঁধে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে নেমে পড়েন। শুধু নিবন্ধন করা জেলে ২৬ হাজারের বেশি রয়েছেন। এ ছাড়া শখের বশে বা অপেশাদারসহ বেশ কিছু মানুষ কাপ্তাই হ্রদ থেকে মাছ শিকার করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। রাঙামাটি ছাড়াও দেশে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত জেলে এসেছেন মাছ ধরার জন্য। কাপ্তাই হ্রদের মাছ ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার নেওয়া হচ্ছে।
[৩] রাঙামাটি বিএফডিসি সূত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই হ্রদে প্রজনন মৌসুমে প্রতি বছর তিন মাস মাছ শিকার, বিপণন, পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় গত ২০ এপ্রিল থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত তিন মাসের জন্য জেলা প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে কাপ্তাই হ্রদে পানি না বাড়ায় আরও দুই দফা মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো হয়। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গত শুক্রবার ভোর থেকে মাছ ধরা শুরু হয়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাছ ধরার জেলে বেড়ে যায়। এতে পুরো কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা উৎসব সৃষ্টি হয়। রাঙামাটি শহর এলাকা, কাপ্তাই, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল, বাঘাইছড়ি, লংগদু, নানিয়ারচর উপজেলায় কাপ্তাই হ্রদের অংশে বেশি জেলে ভিড় করেছেন।
[৪] সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি শহর এলাকা চেঙ্গীমুখ, বন্দুকভাঙা, বড়াদাম, মোরঘোনাসহ লংগদু কাট্টলী বিলে হাজার হাজার জেলে মাছ শিকারে নেমেছেন। প্রথম দিনে জেলেদের জালে কাঁচকি, চাপিলাসহ ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়েছে। এতে রাঙামাটি শহর, কাপ্তাই, মহালছড়ি ও মারিশ্যার এই চার অবতরণকেন্দ্র থেকে এক দিনে ১২৪ মেট্রিক টন মাছ আহরণ করা হয়েছে। এই মাছ থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। গত মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদ থেকে ৬ হাজার ৫২৩ মেট্রিক টন মাছ আহরণ করা হয়। এতে রাজস্ব আয় হয় ১১ কোটি ৬৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা।
[৫] বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটির ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল ইসলাম ভ‚ঁইয়া বলেন, চলতি মৌসুমে প্রথম দিনে ১০০ মেট্রিক টনের বেশি মাছ পাওয়া গেছে। বেশি দিন মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় জেলে, ব্যবসায়ীরাসহ সবাই লাভবান হবেন। শুরুতে শুধু কাঁচকি, চাপিলা ও আইড় মাছ বেশি ধরা পড়ছে। জেলেরা এখনো বড় মাছের জাল ফেলেননি। আশা করছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মাছ উৎপাদন ভালো হবে।