
ক্ষুদ্রঋণ, ড. ইউনূসের নোবেলজয় এবং গণতন্ত্র

রবিউল আলম
নোবেল পুরস্কার, বিশ্ব মানবসেবা এবং আবিষ্কারের জন্য। আবিষ্কারকদের জন্য। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ নোবেল পেয়েছিলেন কবিতার ছন্দে, মনের আনন্দে ও বিরহের গানের সুরে। সাহিত্যের প্রতিটি মোহনায় কবিগুরুর অবদান, বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত সৃষ্টির কর্তা ছিলেন কবিগুরু। একজন বাঙালি বেঁচে থাকতে গুরুর স্থান কেউ মুছে দিতে পারবে না। নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন অমর্ত্য সেন, অর্থনীতির জন্য। বাঙালি সংস্কৃতি ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ নিয়ে আপোস করেননি। মানবিকতা ও মানবতা, ধর্মের ঊর্ধ্বে থেকেছেন। রাষ্ট্রের কোনো ক্ষমতার মোহে নিজেকে বিলিয়ে দেননি। নোবেল পেয়েছেন? না নোবেল তাকে দেওয়া হয়েছে? ড. ইউনূসকে, এই প্রশ্ন অমীমাংসিত আমার কাছে। বিশে^র সব নোবেল পুরস্কারের ব্যাখা আছে, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞানের নিরলস শ্রমে আবিষ্কারের জন্য। মানবসেবার ইতিহাস সৃষ্টিকারীদের জন্য। রাজনৈতিক। পরাধীনতার মুক্তির চিন্তার জন্য নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছে অংসান সুচি সহ পশ্চিমাদের তাঁবেদাররা। বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়নি, তাঁবেদারি গ্রহণ না করার জন্য।
ইউনূস সাহেবকে নোবেল দেওয়ার কারণ দেখানো হয়েছে, ক্ষুদ্রঋণ। সুদের টাকা উঠানোর জন্য। পশ্চিমাদের সেবার জন্য। বাঙালিকে, যতো পারো লুটে আনো, আমরা তোমাকে বাংলাদেশের মসনদে বসাবো। নোবেল দিয়ে শুরু করলাম। তুমি হবে নতুন মীরজাফর। ইতোমধ্যে অনেক গ্রামীণ ঋণ গ্রহীতা আত্মহত্যা করেছে। জীবন বাঁচাতে, জীবন সাজাতে নোবেল? নাকি আত্মহত্যার জন্য নোবেল? পশ্চিমাদের নোবেল পুরস্কার ইউনূস পেয়েছেন? না দিয়েছেন? এই প্রশ্ন বাঙালি জাতির কাছে আজও অমীমাংসিত। যেভাবে বিশে^র পশ্চিমা শক্তি একের পর এক বিজ্ঞপ্তি ও বিজ্ঞাপন দিয়ে ইউনূসের নোবেলের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, তাতে সন্দেহ প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে। বৃটিশরা নবাব-সিরাজ-উদ্দৌলাকে পরাজিত করার লক্ষ্যে মীরজাফরকে হাতে নিয়েছিলো, বাংলার স্বাধীনতার সুবিনষ্ট করার জন্য। রক্তচোষার জন্য মীরজাফর সেই কলঙ্ক মুছতে পারেননি। মীরজাফরের নামটা বাঙালি জাতির গালিতে পরিণত হয়েছেন।
বাংলাদেশের অর্থ ও রক্ত চুষে বিশ্বকে জয় করেছেন ইউনূস। শ্রমিকের বেতন, রাষ্ট্রের রাজস্ব ফাঁকির জন্য আইনের কাছে জবাবদিহি চলছে। মুক্তির জন্য একজন বাঙালি, প্রতিবাদ করেনি। বিদেশী প্রভুরা চিঠি দিচ্ছেন। বিচার বিভাগের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ। প্রতিটি দেশের নিজস্ব বিচার ব্যবস্থা আছে,আছে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের নীয়ম নীতি। জুতা চুরে বিচার হয় বাংলাদেশে, অর্থ পাচারের বিচার হবে না। শেখের বেটিকে তোমরা, এখনো চিনতে পারলা না? নোবেলের কাছে বিক্রি হয় না, পশ্চিমাদের দালালির জন্য, বাঙালির স্বার্থ বিসর্জন দিবে না। বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান পশ্চিমাদের দাসত্ব গ্রহণ করেনি,ক্ষমতার জন্য। বাঙালির কৃতদাস ছিলেন। এখনো বাঙালি জীবন দিতে পারে।
তোমরা হত্যা করে মানুষের মন থেকে মুছে দিতে পারোনি। ১৬০ জন বিশ^ নেতা বিজ্ঞাপন ও বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ইউনূসকে বাঙালির মনে স্থান করে দিতে পারবে না। মনের স্বাধীনতার নাম গণতন্ত্র। মোশতাক, জিয়া, গোলাম আজমকে বাংলার মাটিতে প্রতিষ্ঠিত করতে পারোনি। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার থেকে রক্ষা করতে পারোনি। তৃতীয় ধারা সৃষ্টি করতে চাও। ফ্রিডম পার্টি দিয়ে হয়নি, বিএনপির মাধ্যমে পারছো না, যুদ্ধপরাধী জামায়াতকে বাঙালি ক্ষমা করবে না। মান্না, নূর, রেজাকে নিয়ে অনেক খেলা হয়েছে। খেলতে চাও ইউনূসকে নিয়ে? রক্তচোষা,সুদখোর, লুটেরাদের বাংলাদেশের মাটি সইতে পারছে না। স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে পারে, বিচারহীনতার অপবাদ মানতে পারবে না। ইউনূসের বিচার বন্ধ হলে, বাংলার মাটিতে কবর হতে পারে। পশ্চিমারা সেই ধাক্কা সইতে পারবেন তো? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহŸানে দুর্নীতির নথি খতিয়ে দেখুন, আইনজ্ঞের মাধ্যমে। মানবাধিকার, গণতন্ত্র রক্ষার জন্য ইউনূস? নাকি গণতন্ত্র ধ্বংসকারী? আমেরিকায় বসে বিজ্ঞপ্তি ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আপনাদের চরিত্র বিশ্বের কাছে প্রকাশ করবেন না। বাঘে ধরলে ছাড়ে, শেখের বেটী ধরলে ছাড়ে না। বাঙালিরা ঘরে ঘরে জানে, আপনাদের কেন জানা হলো না?
লেখক: মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি
