ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা পটুয়াখালী রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা হচ্ছে
সোহেল রহমান : [১] দেশের দক্ষিণাঞ্চলে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) স্থাপনের মাধ্যমে বিনিয়োগ আহরণের লক্ষ্যে পটুয়াখালী-তে রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়নের পরিমাণ হচ্ছে ১ হাজার ১০৫ কোটি টাকা এবং অবশিষ্ট ৩৩৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা দেবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ‘বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ’ (বেপজা)। প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছে তিন বছর (২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালে জুন পর্যন্ত)।
[২] বেপজা সূত্রে জানা যায়, প্রকল্প এলাকা হচ্ছে পটুয়াখালী জেলার পটুয়াখালী সদর ও কলাপাড়া উপজেলা। এখানে ইপিজেড স্থাপনের উদ্দেশ্য হচ্ছেÑ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ইপিজেড স্থাপনের মাধ্যমে বিনিয়োগ আহরণ, রপ্তানি আয় বাড়ানো ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখা।
[৩] প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রমগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ ৪১৮.০১ একর ভ‚মি ক্রয় ও উন্নয়ন; ৩০৬টি শিল্প প্লট সৃষ্টি; রাস্তা, ড্রেন নির্মাণ; ০৪টি ০৬ তলা কারখানা ভবন নির্মাণ; ০৩টি ১০ তলা ও ০৪টি ০৬ তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ; ০১টি ০৬ তলা ও ০২টি ০৪ তলা অফিস ভবন নির্মাণ এবং ০২টি অন্যান্য ভবন নির্মাণ; ১৪টি ১১/০.৪১৫ কেভি সাবস্টেশন, ১৫.৩২ কিলোমিটার ১১ কেভি এইচটি লাইন ও ০১টি ৩৩/১১ কেভি জিআইএস সাবস্টেশন নির্মাণ; ০১টি হেলিপ্যাড এবং সিইটিপি ও এসটিপি নেটওয়ার্ক, বৈদ্যুতিক সুবিধা, সংযোগ রাস্তা, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ জলাধার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুবিধাদি সৃষ্টি।
[৪] বেপজা সূত্রে জানা যায়, ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জিডিপি-তে শিল্পখাতের অবদান ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের মধ্যে ৪২ শতাংশে এ উন্নীত করা, শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি ১২ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং পণ্যের উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধি, শ্রমঘন শিল্পকে অগ্রাধিকার প্রদান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ, রপ্তানিমূখী শিল্পের উৎপাদন বৃদ্ধি, আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদন, শিল্প উৎপাদনে বেসরকারি খাতের প্রসার, উৎপাদন বহুমূখীকরণ এবং শিল্প উৎপাদনে প্রতিযোগিতা বাড়ানোর ওপর অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা-৯-এ ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই শিল্পায়ন এবং জাতীয় পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে ২০৩০ সালের মধ্যে কর্মসংস্থান ও জিডিপিতে শিল্পখাতের অংশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে এই খাতের অবদান দ্বিগুণ করা হবে’ বলে উল্লেখ রয়েছে।
[৫] প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শিল্পের বিকাশ, বিনিয়োগ আহরণ, রপ্তানী আয় বৃদ্ধি এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ১ লাখ লোকের ও পরোক্ষভাবে আরও ২ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ইপিজেড সংলগ্ন এলাকায় অগ্রজ ও পশ্চাদপদ শিল্প-কারখানা গড়ে উঠার প্লাটফরম সৃষ্টি হবে এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্থানীয় শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্ভব হবে। ফলে বিনিয়োগ আহরণ এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক বৈষম্য কমিয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতিতে এ প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।