চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে অবকাঠামো ও জনবল খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
সোহেল রহমান : [১] দেশে সর্বজনীন ও মানসম্মত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য খাতের অবকাঠামো ও জনবল নিয়োগে ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে মনে করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মতে, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-এর লক্ষ্যসমূহ অর্জন করা একটি বড় সমস্যা। সর্বজনীন মানসম্মত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা স্বাস্থ্য সেবা খাতের প্রধান চ্যালেঞ্জ। আর এক্ষেত্রে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হচ্ছেÑ অবকাঠামো ও জনবল খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ; আধুনিক মেডিকেল যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, দক্ষ ও নিবেদিত বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য কর্মচারীর ব্যবস্থা করা।
[২] সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে সম্পাদিত চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক কর্ম-সম্পাদন চুক্তি (এপিএ)-তে এসব সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
[৩] মন্ত্রণালয় বলছে, সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ও এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বাস্থ্য খাতের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও অর্জনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গৃহীত পরিকল্পনার আওতায় চলতি অর্থবছরে ৫০টি নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ এবং ৩০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক পুনঃনির্মাণ করা হবে। এছাড়া ৩টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হবে এবং ২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হবে।
[৪] মন্ত্রণালয় বলছে, এর বাইরে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ-এর অন্যতম পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছেÑ আগামী ২০৩২ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা; তৃণমূল পর্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে আরও ৫০টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা; আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে বিভাগীয় শহরে ৪৬০ শয্যা বিশিষ্ট কিডনী ডায়ালাইসিস, হৃদরোগ ও ক্যান্সার ইনস্টিটিউট-এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা; আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-কে ৫ হাজার শয্যায় রূপান্তর করা এবং আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে দেশের ৮টি বিভাগে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট ১টি করে বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল চালু করা; জনগণের সকল ধরণের বিশেষায়িত চিকিৎসা সেবা এক জায়গায় আনার লক্ষ্যে ঢাকার মহাখালী-তে বঙ্গবন্ধু হেল্থ সিটি স্থাপন করা এবং জনগণের পুষ্টিমান উন্নয়নে ভিটামিন-এ পরিপূরক গ্রহীতার হার আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগে উন্নীত করা ইত্যাদি।
[৫] চুক্তিতে গত তিন বছরে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকান্ডের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করোনা মোকাবেলায় সফল হয়েছে, যা বিশ^ব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম এবং পৃথিবীর অন্যান্য ১২১টি দেশের মধ্যে ৫ম স্থান অধিকার করেছে। এগারো কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত বিনামূল্যে ১৫ কোটি ৭ লাখ প্রথম ডোজ; ১৩ কোটি ৯৩ লাখ দ্বিতীয় ডোজ; ৬ কোটি ৭৪ লাখ তৃতীয় ডোজ (প্রথম বুস্টার ডোজ) এবং ৩১ লাখ ৫৭ হাজার দ্বিতীয় বুস্টার ডোজসহ মোট ৩৬ কোটি ৬ লাখ ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।