তিন দিনেও বাজারে কার্যকর হয়নি সরকারের বেঁধে দেওয়া তিন নিত্যপণ্যের দাম কার্যকারি না হওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে
মাসুদ মিয়া: সরকারের পক্ষ থেকে বেঁধে দেওয়া তিন নিত্যপণ্যের ডিম, আলু- পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ দামে বিক্রি করছে না ব্যবসায়ীরা। তিন দিনেও বাজারে কার্যকর হয়নি সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম। কার্যকারি না হওয়া সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, এর আগেও চিনি ও সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। তবে তা বাজারে কার্যকর হয়নি। সরকারের নজরদারিও ছিল না। এবারও যে বেঁধে দেওয়া দাম কার্যকর হবে না, এমনটাই মনে করেন তারা। গতকাল রোববার রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার মুদি ও সবজির দোকান এবং স্থানীয় বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এসব এলাকায় খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়, যদিও সরকার নির্ধারিত দাম ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা। আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় এবং ১৩ টাকা বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ডিম। তবে প্রতিকেজি আলুর সরকার নির্ধারিত দাম ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা। মতিঝিল কলোনি মসজিদ মার্কেটে ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা করে। সরকার নির্ধারিত দাম মানছে না তারা
ডিম বাদে অন্য দুই পণ্যের ক্ষেত্রে দোকানি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা দুষছেন পাইকারদের। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই দুই কৃষিপণ্যের বেঁধে দেওয়া দামের বিষয়ে তারা জানলেও এই দাম কার্যকর করা সম্ভব না বলে মনে করেন। কারণ হিসেব বলছেন, বাড়তি দামেই পাইকারদের কাছ থেকে তাদের পণ্য কিনতে হচ্ছে। নাজমুল নামের এক মুদি দোকানি আকারভেদে সাজিয়ে রেখেছেন আলু। বড় আকারের আলু ৫০ টাকা, এর চেয়ে একটু ছোট ৪৮ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন তিনি। একই দোকানে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকায় আমদানি পেঁয়াজ ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এবিষয়ে মিরপুর পিরেরবাগ বাজারের ক্রেতা ফিরোজ বলেন, সরকার কোনো কিছুর দাম বাড়ালে দোকানিরা সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়িয়ে দেয়। তখন তারা চিন্তা করে না, পণ্যটি আগে কম দামে কেনা। আর সরকার কোনো পণ্যের দাম কমালে দোকানিরা সঙ্গে সঙ্গে দাম কমায় না। তখন তারা নানা ধরনের অজুহাত দেখায়। আসলে বেশি লাভের আশায় বিক্রেতারা বাজারে একধরনের অস্থিরতা তৈরি করে। আর বিড়ম্বনায় পড়ে ভোক্তারা। দাম কমলেও ভোক্তাকে বেশি টাকা দিয়েই পণ্য কিনতে হয়। অসাধু ব্যবসায়ীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ফিরোজ আরও বলেন, আলু, পেঁয়াজ, ডিম এখনো বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। বাজারের লাগাম টানতে গত বৃহস্পতিবার আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে মানুষ বহুদিন ধরেই হাঁসফাঁস করছে। এ পরিস্থিতিতে মানুষ আশা করেছিল, সরকারের নতুন এ পদক্ষেপ কার্যকর করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কিন্তু সারা দেশে আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের নির্ধারিত মূল্য কার্যকর হয়নি। এদিকে স¤প্রতি কৃষিমন্ত্রী বলেছিলেন, দেশে আলুর যথেষ্ট ভালো ফলন হয়েছে। এরপরও কেন আলুর দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে, তা খতিয়ে দেখা দরকার। শুক্রবার বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমরা সবাই মিলে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। তিনি বলেছেন-পেঁয়াজ, আলু, ডিমের বেঁধে দেওয়া দাম জোরালোভাবে মনিটরিং হচ্ছে।