অর্থনীতি ডেস্ব : [১] ভারতের সঙ্গে পূর্ব ঘোষিত বাণিজ্য মিশন নামের বহুল প্রতীক্ষিত বাণিজ্যচুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে কানাডা সরকার। এ প্রসঙ্গে আগামী অক্টোবরে দুই দেশের আলোচনা হওয়ার কথা থাকলেও কারণ উল্লেখ না করেই শুক্রবার এ ঘোষণা দিয়েছেন কানাডীয় বাণিজ্যমন্ত্রী ম্যারি নাগের মুখপাত্র শান্তি কসেন্টিনো। তিনি বলেছেন, ভারতে আসন্ন বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করছি আমরা।
[২] অবশ্য আগের দিন ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ‘কানাডায় রাজনৈতিক ইস্যুতে’ একটি বাণিজ্য চুক্তি আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে।
[৩] ২০১৭ সালের জুনে শিখস ফর জাস্টিস (এসএফজে) নামের একটি সংগঠন ২০২০ সালে পাঞ্জাবের স্বাধীনতার দাবিতে এক গণভোটের আয়োজনের ডাক দিয়েছিল। সংগঠনটির পক্ষ থেকে কানাডা ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই গণভোটের পক্ষে প্রচারণা চালানোর ঘোষণা দেওয়া হয় সেই সময়।
[৪] ভারতে নিষিদ্ধ খালিস্তানপন্থিদের কানাডায় বিতর্ক কর্মকাÐে দিল্লি –অটোয়া’র সম্পর্কের অবনতি ২০২৩ সালে দৃশ্যমান। এই বিতর্ক নতুন করে উসেকে দিলেন নরেন্দ্র মোদি। দিল্লিতে সদ্য শেষ হওয়া জি-২০ সম্মেলনের এক ফাঁকে তিনি শিখ ইস্যুতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রæডোর সমালোচনা করেন।
[৫] গত মে মাসে কানাডার বাণিজ্যমন্ত্রী নাগ এবং ভারতের পীযূষ গোয়াল যৌথ বিবৃতি জানিয়েছিলেন, বছরের শেষ নাগাদ তাদের দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আশাবাদী। যা এখন ভেস্তে যাওয়ার পথে। জি-২০ সম্মেলন থেকেই বিষয়টি ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। যখন নরেন্দ্র মোদি জাস্টিন ট্রæডোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বসেননি। তখন থেকে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন ওঠে।
[৬] দিল্লিতে ট্রæডোর বিমানে যান্ত্রিক ত্রæটি দেখা দেওয়ার পর অতিরিক্ত ৩৬ ঘণ্টা তিনি দেশটিতে অবস্থান করছিলেন। ধারণা করা হচ্ছিল, এক ফাঁকে মোদি-ট্রæডোর বৈঠক হতে পারে। কিন্তু তা হয়ে উঠেনি। এমনকি বিদায় জানানোর সময়ও মোদিকে দেখা যায়নি। একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিদায় জানান কানাডীয় প্রধানমন্ত্রীকে।
[৭] উল্লেখ্য, ষোড়শ শতাব্দীতে দাস হয়ে আটলান্টিক উপক‚লে বসতি গড়েছিলেন ভারতীয়রা। কালক্রমে উত্তর আামেরিকার দেশ কানাডার সবচেয়ে দ্রæত বেড়ে ওঠা স¤প্রদায় হয়ে উঠে ভারতীয় শিখ স¤প্রদায়। দেশটির সবচেয়ে বড় বিদেশি স¤প্রদায় চাইনিজ-কানাডিয়ানদের পরে ১৩ লাখেরও বেশি শিখদের এই স¤প্রদায় এখন কানাডার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও বেশ প্রভাবশালী। ট্রæডোর মন্ত্রিসভাতেও রয়েছেন শিখ মন্ত্রী। ২০১৭ সালে ভারতের পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ তোলেন, শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে সমর্থন দিচ্ছেন কানাডার মন্ত্রীরা। এরপর বরাবরই এমন অভিযোগ তুলে আসছে মোদি সরকার। সূত্র : আল জাজিরা, বাংলা ট্রিবিউন