
সংকটের সময় ডিম আমদানি করা ভালো দীর্ঘমেয়াদী হলে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে : কাজী ফার্মস এমডি কাজী জাহেদুল হাসান

মাসুদ মিয়া: [১] অস্বাভাবিকভাবে ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার ভারত থেকে ডিম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এবিষয়ে কাজী ফার্মস ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী জাহেদুল হাসান এ প্রতিবেককে বলেন, সংকটের সময় ভারত থেকে ডিম আমদানি করা ভালো হবে তবে দীর্ঘমেয়াদি হলে দেশের পোল্ট্রি খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত মুখে পরবে। [২]জাহেদুল হাসান বলেন, আমরা ডিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে আমাদের ডিমের প্রাইজ বাড়ানো হয় নাই। আগের দামেই রয়েছে। আমরা প্রতি পিচ ডিম ১১ টাকা ৩০ পয়সায় বিক্রি করছি। হাত বদল হচ্ছে আর ডিমের দাম বেড়ে যাচ্ছে। [৩]জাহেদুল হাসান আরও বলেন, ভারতের সাথে তুলনা করলে হবে না। ভারত থেকে সব কিছু আমাদের দেশে আসে। আমাদের দেশের তুলনায় ভারতে সব কিছুর দাম অনেক কম। তিনি বলেন, আমাদের দেশে পেঁয়াজের প্রডাকশন কম দেখে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। কাজী জাহেদুল হাসান বলেন, আমাদের দেশে ডিমের প্রডাকশন আছে উৎপাদন খরচটাও অনেক বেশি। উৎপাদন খরচ কমলে ডিমের দামও কমে যাবে। এদিকে ডিমের দাম স্থিতিশীলতা আনতে ভারত থেকে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। চার প্রতিষ্ঠানকে এ অনুমতি দেওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
[৪]তিনি জানান, ডিমের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে আপাতত চার কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চার প্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে এক কোটি করে ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমদানি করা ডিম খুচরাপর্যায়ে সরকার নির্ধারিত দাম প্রতি পিস ১২ টাকায় বিক্রি হবে।
[৫]মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজ, প্রাইম এনার্জি ইম্পোর্টার্স এনবড সাপ্লাইয়ার্স, টাইগার ট্রেডিং, অর্ণব ট্রেডিং লিমিটেডকে ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
[৬]এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর খুচরাপর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। তারপরও বাজারে কমেনি দাম। শেষপর্যন্ত ডিম আমদানির অনুমতি দিলো সরকার।
[৭]ডিম আমদানির জন্য পাঁচটি শর্ত নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এগুলো হলো এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু মুক্ত ডিম আমদানি করতে হবে। আমদানি করা ডিমের প্রতিটি চালানের জন্য রপ্তানিকারক দেশের সরকারের মাধ্যমে নির্ধারিত কিংবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লুর ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ামুক্ত সনদ দাখিল করতে হবে। সরকার নির্ধারিত শুল্ক বা কর পরিশোধ করতে হবে। নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করা যাবে না। সরকারের অন্য বিধিবিধান মেনে চলতে হবে। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতিদিন চার কোটি ডিমের প্রয়োজন হয়। সেই হিসাবে আমদানি করা ডিম দিয়ে একদিনের চাহিদা পূরণ করা যাবে।
[৮]বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, গত মাসে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী একটি দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সাড়ে ১০ টাকা উৎপাদন খরচ। খুচরাপর্যায়ে বিক্রির জন্য ১২ টাকা। খুচরাপর্যায়ে এ দামে বিক্রি হচ্ছে না বলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর দেখতে পেয়েছে। এজন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে আমরা কিছু ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছি। সচিব আরও বলেন, আপনারা জানেন, বাংলাদেশে প্রতিদিন চার কোটি ডিম লাগে। সেক্ষেত্রে আমরা একদিনের ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছি। এটা মার্কেটে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে কিংবা আমাদের খামারিরা খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছি না।
