চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্যোগ
সোহেল রহমান : [১] চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণাঞ্চলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) কর্তৃক নির্মাণাধীন অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহ এবং গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি-তে নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণাঞ্চল এবং কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’র সঞ্চালন অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করবে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট বাংক (এআইআইবি)। বাস্তবায়ন করবে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) লিমিটেড। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৭৬২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে এআইআইবি’র অর্থায়নের পরিমাণ ১ হাজার ৬৯৬ কোটি ৪৬ লাখ কোটি টাকা; প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা পিজিসিবি’র অর্থায়নের পরিমাণ ৪১৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এবং অবশিষ্ট ৬৫১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা দেবে সরকার।
[২] বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সময়সীমা ধরা হয়েছে ৫ বছর (২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত)। প্রকল্প এলাকার আওতায় রয়েছেÑ গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, কক্সবাজার সদর, রামু, উখিয়া, টেকনাফ এবং চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা, বাঁশখালী, সাতকানিয়া ও লোহাগড়া উপজেলা।
[৩] সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণাঞ্চলে (কক্সবাজার সদর, টেকনাফ, আনোয়ারা) বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার গ্রিড অবকাঠামো উন্নয়ন এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে বেজা কর্তৃক নির্মাণাধীন অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহ ও গাজীপুরে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা Ñএ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য।
[৪] প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেÑ আনোয়ারা ২৩০/১৩২/৩৩ কেভি ইনডোর জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ ও বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি ২৩০/৩৩ কেভি ইনডোর জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ; কক্সবাজার (উত্তর) ১৩২/৩৩ কেভি ইনডোর জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ ও টেকনাফ ১৩২/৩৩ কেভি ইনডোর জিআইএস নির্মাণ (গ) আনোয়ারা-কক্সবাজার (উত্তর) ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণ: ১০৯ কিলোমিটার ও কালিয়াকৈর-বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণ: ৪.৮৮ কিলোমিটার; কক্সবাজার (উত্তর)-টেকনাফ ১৩২ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণ; ৬৫ কিলোমিটার ও দোহাজারী-কক্সবাজার ১৩২ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন থেকে কক্সবাজার (উত্তর) উপকেন্দ্রে ১৩২ কেভি লাইন-ইন-লাইন-আউট নির্মাণ: ১.৫৫ কিলোমিটার এবং ২৩০ কেভি বিদ্যমান কালিয়াকৈর উপকেন্দ্রে ২৩০ কেভি এআইএস ২টি বে-সম্প্রসারণ।
[৫] বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় মোট ৩৩৫৮ সার্কিট কিলোমিটার বিদ্যমান বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের ক্ষমতাবর্ধন এবং হাই ভোল্টেজ সম্পন্ন নতুন বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করতে সঞ্চালন ব্যবস্থায় বিদ্যমান উপকেন্দ্রসমূহের প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণসহ উক্ত অঞ্চলে বেজা কর্তৃক নির্মাণাধীন অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহ ও গাজীপুরে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।