তিন দ্বীপ শতভাগ বিদ্যুতায়নে ২৬২ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ছে
সোহেল রহমান : [১] তিনটি দ্বীপে শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে ২৬২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ছে। দ্বীপ তিনটি হচ্ছেÑ নোয়াখালী ও কক্সবাজার জেলার আওতাধীন হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রথমে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৮৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। সংশোধিত প্রস্তাবে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪৭ কোটি ১২ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো)।
[২] বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের কর্মপরিধিতে পরিবর্তন (বিতরণ লাইনের পরিমাণ ৮১০ কিলোমিটার বৃদ্ধি; পোল মাউন্টেড বিতরণ ট্রান্সফরমারের সংখ্যা ৫৫০টি বৃদ্ধি; বিভিন্ন পূর্ত কাজের পরিমাণ হ্রাস/বৃদ্ধি; ভ‚মি অধিগ্রহণ ২.০২ একর বৃদ্ধি) এবং বিভিন্ন অঙ্গে ব্যয় হ্রাস/বৃদ্ধির কারণে সার্বিকভাবে প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে।
[৩] সূত্র জানায়, ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রকল্পে সরকারি অর্থায়নের পরিমাণও বাড়ছে। মূল প্রস্তাবে সরকারি ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৭০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এখন এটি বাড়িয়ে ৫৯৭ কোটি ১২ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। অন্যদিকে মূল প্রকল্পে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো)-এর অর্থায়নের পরিমাণ ধরা হয়েছিল ১৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। সংশোধিত প্রস্তাবে এটি বাড়িয়ে ৫০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
[৪] সূত্র জানায়, প্রকল্প ব্যয় বাড়ার পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমাও দুই বছর বাড়ানো হয়েছে। মূল প্রস্তাবে প্রকল্পটি চলতি বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন এটি বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
[৫] বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, হাতিয়া দ্বীপ শতভাগ বিদ্যুতায়ন (আইপিপি ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে বিদ্যুৎ সরবরাহসহ); সাবমেরিন ক্যাবল দ্বারা মুকতারিয়া-নিঝুমদ্বীপ খাল পারাপার করে নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া চ্যানেল পারাপার করে কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ বিদ্যুতায়ন এবং হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপের শতভাগ গ্রাহককে নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনাÑ এ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য ।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-তে ৪৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
[৬] প্রকল্পের আওতায় উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেÑ নতুন ৪টি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ (হাতিয়া দ্বীপে ৩টি ও কুতুবদিয়া দ্বীপে ১টি); মুকতারিয়া-নিঝুমদ্বীপ খালে ১.৫ কিলোমিটার ১১ কেভি সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন; (গ) কুতুবদিয়া চ্যানেলে ৫ কিলোমিটার ডাবল সার্কিট ৩৩ কেভি সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন; নতুন মোট ১ হাজার ৪৮৬ কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণ; বিদ্যমান ৩৫ কিলোমিটার বিতরণ লাইন রেনোভেশন; মোট ৩ হাজার ২৫০টি পোল মাউন্টেড বিতরণ ট্রান্সফরমার স্থাপন এবং অফিস ভবন কাম রেস্ট হাউজ, ডরমেটরি, সীমানা দেয়াল ইত্যাদি নির্মাণ।
[৭] বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় একটি রাজস্ব সাশ্রয়ী, দক্ষ, সর্বনি¤œ ব্যয়ের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উপর জোর দেয়া হয়েছে এবং দক্ষ ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সকলের জন্য নির্ভরযোগ্য, আধুনিক ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ এলাকার বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার স¤প্রসারণ এবং মানোন্নয়ন নিশ্চিত করে নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ ও সেবার গুণগত মান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।