শামসুদ্দীন ইলয়াস
কি একটা অরাজকতায় আছি! এটা কিভাবে সম্ভব জানি না!! ব্যাংকে টাকা তুলতে গিয়ে দেখি একাউন্টে আমার টাকা নাই। টাকা কোথায় গেল খোঁজ নিয়ে জানতে পারি আমার থেকে ঝঁঢ়বৎারংরড়হ ঈযধৎমব/ তদারকি মাসুল কেটে নিয়েছে! কারন ব্যাংক থেকে আমি একটা পার্সোনাল লোন নিয়েছি তার জন্য। কিন্তু যে একাউন্ট থেকে টাকাটা নিলো সেটার সাথে লোনের কোন ধরনের সম্পর্ক নেই! এই একাউন্ট থেকে টাকা কাটার অনুমতি আমি ব্যাংকে দিই নাই।
ব্যাংক থেকে আমি কিছু পার্সোনাল লোন নিয়েছি, আমার স্যালারি একাউন্ট থেকে প্রতিমাসে কিস্তি কেটে নিয়ে যায়, কখনো তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু গত মাসে আমার অজান্তে একই ব্যাংকে আমার আরেকটি একাউন্ট থেকে ঝঁঢ়বৎারংরড়হ ঈযধৎমব বা তদারকি মাসুল কেটে নেয় ব্যাংক! কি এই তদারকি মাসুল খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, বাংলাদেশ ব্যাংক নাকি ব্যাংকগুলোকে অনুমতি দিয়েছে যাদের পার্সোনাল ঋণ/ ভোক্তা ঋণ ও এস এম ই ( ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঋণ) তাদের থেকে ব্যাংক নির্ধারিত সুদের বাহিরে প্রতি বছর ১% করে তদারকি মাসুল কেটে নিবে!
কিন্তু প্রশ্ন হলো এই সম্পর্কে ব্যাংক আমাকে কিছুই জানালো না। আবার অন্য আরেকটি একাউন্ট থেকে টাকাটা কাটলো! শুধু তাই নয় যে টাকা ব্যাংক কেটে নিলো সেটার উপর আরো ১৫% ভ্যাট কেটে নিলো। ব্যাংক অন্যায়ভাবে আমার টাকা নিয়ে নিলো, আবার তার ( ব্যাংকের) লাভের উপর ১৫% ভ্যাট আমাকে দিতে হলো।
শুধু তাই নয়, এই ১% তদারকি মাসুল কিন্তু কর্পোরেটদেরকে দিতে হবে না। শুধু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে প্রতিবছর এটা কেটে নেওয়া শুরু করেছে। কিন্তু দেশে এই সি এম এস এম এই লোনের রিকভারি প্রায় ৮৮%. অথচ কর্পোরেট লোন অর্থাৎ বড় কোম্পানির ঋণের রিকভারি আরো অনেক কম। হাজার কোটি টাকা নিয়ে তারা চলে যাচ্ছে তাদের এটা দিতে হবে না। এক দেশে দুই আইন! এটা একটা অবিচার ছাড়া কিছুই না। বাংলাদেশ ব্যাংক কি আমাদের পকেট কাটার জন্য? ৯% রেটে লোন নেওয়ার পর তারা এখন সেটা ১০.১০% করে দিলো। ব্যাংক কোন চিঠি ছাড়াই ১০.১০% কেটে নিচ্ছে। এখন আবার প্রতি বছর ১% করে মানে আরো প্রায় ৪-৫% যোগ হলো। এর আগে লোন নেওয়ার সময় সার্ভিস চার্জ দিয়েছি, আরো কত হিডেন চার্জ দিচ্ছি। সব মিলে ১৬-১৭% হয়ে যাচ্ছে। এই অরাজকতা ও অবিচারের শেষ কোথায়?
লেখক: সাংবাদিক, চট্টগ্রাম ব্যুরোচীফ, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড