আব্দুর রহিম : [১] ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ৪৪ সেনাসহ অন্তত ৪০০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। শনিবার গাজা উপত্যকা থেকে হামাসের প্রায় ১ হাজার যোদ্ধা ইসরায়েলে প্রবেশ করেন। এরপর সেখানে তারা হামলা চালানো শুরু করেন।
[২] মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে শনিবার ভোর থেকে অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড নামের একটি অভিযান শুরু করে হামাস।
[৩] ফিলিস্তিনি এ গোষ্ঠীর হামলায় প্রথমে ২৬ সেনা নিহতের তথ্য জানিয়েছিল ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তবে রোববার ইসরায়েল সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, হামাসের হামলায় ৪৪ সেনা ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর ৩০ সদস্য নিহত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। তারা পুলিশ, সীমান্তরক্ষী এবং সন্ত্রাসবিরোধী বাহিনী ইয়ামামের সদস্য ছিলেন।
[৪] পরবর্তীতে সেনাবাহিনীও ৪৪ জন সেনা নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মাইক্রো বøগিং সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) নিহতদের নাম ও পরিচয় প্রকাশ করেছে বাহিনীটি। তারা জানিয়েছে, নিহত সেনাদের পরিবারকে তাদের মৃত্যুর ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে।
[৫] ইসরায়েলি সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ এখনো অনেক সেনা নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া হামাসের সদস্যরা বেশ কয়েকজনকে আটক করে গাজায় নিয়ে গেছেন। সেখানে তারা কি অবস্থায় আছে সে বিষয়টি নিশ্চিত নয়। অপরদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪০০ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
[৬] ইসরায়েলি বাহিনী ও হামাস যোদ্ধাদের চলমান লড়াইয়ের মাঝে আল-কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবাইদা একটি নতুন বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। এতে তিনি সাধারণ জনগণকে এই যুদ্ধে যোগ দেওয়ার আহŸান জানিয়েছেন।
[৭] গাজায় হামাসের মুখপাত্র আবদেল-লতিফ আল-কানোয়া বলেছেন, আমাদের জনগণকে রক্ষার জন্য ইসরায়েলে হামলা চলছে। হামাসের যোদ্ধারা রকেট হামলা অব্যাহত রেখেছে। ৫০ বছর আগে ইয়োম কিপ্পুর যুদ্ধে হারানো অঞ্চল পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় মিসর ও সিরিয়া একযোগে ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা শুরু করেছিল। ওই যুদ্ধের পর এবারে হামাসের হামলা ইসরায়েলে সবচেয়ে বড় এবং ভয়াবহ প্রাণঘাতী হিসেবে দেখা দিয়েছে।
[৮] হামাসের সশস্ত্র শাখা বলছে, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তারা অপহরণ করা ইসরায়েলি সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিকদের সংখ্যা প্রকাশ করবে। ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিশোধ হিসেবে তারা চলমান হামলা অব্যাহত রাখবে।
[৯] অন্যদিকে, গাজার বর্তমান বাস্তবতা বদলে দেওয়ার হুঙ্কার দিয়েছে ইসরায়েল। হামাসের কমান্ডার ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে যুদ্ধবিমান থেকে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সৈন্যরা। তবে এই হামলায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকরাও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন। সূত্র: সিএনএন, রয়টার্স, আলজাজিরা।