৮ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমেছে ২১.৭৭ শতাংশ
মো. আখতারুজ্জামান : [১] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে। দেশটিতে ২০২৩ সালের প্রথম আট মাসে পোশাক রপ্তানি ২১.৭৭ শতাংশ হ্রাস পেয়ছে। অর্থনৈতিক মন্দার ফলে রপ্তানি কমেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। [২] ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ কমার্সেস অফিস অফ টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (ওটেক্সা)-এর তথ্য অনুসারে, এ বছরের প্রথম আট মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ৫.১৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক পণ্য রপ্তানি করেছে; যার পরিমাণ গত বছরের একই সময়ে ছিল ৬.৬২ বিলিয়ন ডলার।
[৩] ওটেক্সার তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের প্রথম ৮ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক পোশাক আমদানি ৬৯.২১ বিলিয়ন ডলার থেকে ৫৩.৪৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, যা ২২.৭৭ শতাংশ কম।
[৪] আলোচ্য সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানির পরিমাণ ২২.৫৩ বিলিয়ন ইউনিট থেকে কমে ১৬.৪৯ বিলিয়ন ইউনিটে এসে দাঁড়িয়েছে, যা ২৬.৮০ শতাংশ কম। এদিকে, চলতি বছরে কেবল জানুয়ারি এবং জুলাই মাসেই বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আগের মাসের তুলনায় জানুয়ারিতে পোশাক রপ্তানি ৭৫১ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ৮৬৬ মিলিয়ন ডলার হয় এবং জুলাইয়ে ৬৯৪ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ৭৪৬ মিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়ায়। পরিমাণের দিক থেকে, আলোচ্য সময়ে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯.১০ শতাংশ বা ১.৫৮ বিলিয়ন ইউনিট; যা গত বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্টের মধ্যে ২.২৩ বিলিয়ন ইউনিট ছিল।
[৫] ওটেক্সার তথ্যমতে, আলোচ্য ৮ মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ চীনের পোশাক রপ্তানি ২৯.৪৭ শতাংশ কমে ১০.৯৮ বিলিয়ন ডলারে এসে ঠেকে। এছাড়া বাজারে দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক ভিয়েতনামের রপ্তানিও ২৪.৫৭ শতাংশ কমে ৯.০৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতের পোশাক রপ্তানি ২১.৬ শতাংশ কমে ৩.২৬ বিলিয়ন ডলার এবং ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি ২৬.১০ শতাংশ কমে ২.৮৯ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
[৬] বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে আমেরিকার ক্রেতারা বর্তমানে উচ্চ সুদহারের মুখোমুখি; তাদের ক্রয় ক্ষমতা ক্রমবর্ধমান মর্টগেজ রেট দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে।
[৭] তিনি বলেন, কিছু চ্যালেঞ্জের কারণে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নাও হতে পারে; তবে বছরের শেষ নাগাদ অন্যান্য প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ ভালো অবস্থান ধরে রাখতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ এখন দেশে কিছু হাই-ভ্যালু আইটেম উৎপাদিত হচ্ছে, যা সামগ্রিকভাবে প্রবৃদ্ধি বজায় রাখাতে সাহায্য করবে। [৮] বিজিএমইএ’র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, একক মাসের হিসেবে দেশের পোশাক রপ্তানি ১৪.৪৬ শতাংশ বেড়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ৩.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২২ সালের একই মাসে ৩.১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিলো। যদিও গত কয়েক মাসে অর্ডারগুলি হ্রাস পেয়েছিল। তবে একক মাসে এই প্রবৃদ্ধি সত্যিই অসাধারণ। যেহেতু আমরা পণ্য এবং বাজার বৈচিত্র্যকরণ, প্রযুক্তি আপগ্রেডেশন এবং উদ্ভাবনসহ প্রবৃদ্ধির নতুন সুযোগগুলো অন্বেষণ করছি, তাই আমরা সুফল পেতে শুরু করেছি।
তিনি বলেন, তবে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে উৎপাদন ব্যয় আকাশচুম্বী হয়েছে। আমাদের প্রধান বাজার যেমন ইইউ এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়েরই সামগ্রিক বিশ্ব এবং বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি গত কয়েক মাসে হ্রাস পেয়েছে, যা আমাদের জন্যও উদ্বেগজনক।