বিশ্বজিৎ দত্ত : [২] তিনি মনে করেন, রিজার্ভ এখন যা আছে, তার চেয়ে কমে গেলে বিপদ হতে পারে। রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকলে একসময় যদি তা ১০ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে, তখন এমন হতে পারে যে আইএমএফের সহায়তা পাওয়া যাবে না।
[৩] বাংলাদেশের রিজার্ভ যেভাবে ধারাবাহিকভাবে কমছে, তার সঙ্গে শ্রীলঙ্কার মিল খুঁজে পান রেহমান সোবহান। যদিও তিনি মনে করেন যে বাংলাদেশের অর্থনীতি নিঃসন্দেহে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে।
[৪] বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, আমাদের বড় একটি রপ্তানি খাত আছে। সেই সঙ্গে আছে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়, যা শ্রীলঙ্কার চেয়ে অনেক বেশি। সে কারণে তিনি বিশ্বাস করেন না, বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কখনো শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে। তবে, বর্তমান বাস্তবতায় রিজার্ভ যদি ১০ বিলিয়ন ডলারে চলে আসে সেটা উদ্বেগের কারণ হবে।
[৫] তিনি বলেন, কাঁচামাল আমদানির এলসি করতে গেলে ব্যাংক বলছে তাদের কাছে যথেষ্ট ডলার নেই। শিল্পে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। কিন্তু বিএমডবিøউ গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে ব্যাংকের একই ধরনের মানসিকতা দেখা যাচ্ছে না।
[৬] তিনি আরও বলেন, বিকল্প উপায়ে হলেও রেমিট্যান্স বাংলাদেশে আসছে। যাদের অর্থ পাবার কথা তারা পাচ্ছে। যে কারণে সামষ্টিক অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়ছে না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি এখন হুন্ডিতেও ডলারের একটি বড় রিজার্ভ তৈরি হয়েছে। এর ফলে অর্থ পাচারের সুযোগ বাড়বে।
[৭] রেহমান সোবহান বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ও বিতরণের সক্ষমতায় বড় ফারাক আছে। এটা কমানো দরকার। শুরুতে বিদ্যুৎ খাতে সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ সম্ভাবনা দেখালেও সামনে এ অবস্থা না-ও থাকতে পারে।
[৮] গতকাল সোমবার অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) এক অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শিরোনাম ছিল অধ্যাপক রেহমান সোবহানের সঙ্গে সংলাপ।
[৯] শীর্ষস্থানীয় এই অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশের আর্থিক খাতের সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন এসেছে। ঋণ নেওয়ার পর ফেরত না দেওয়াটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। এটা করার জন্য বড় ব্যবসায়ী নয়; বরং যারা এসব করছেন, তারা নিজেদের বড় রাজনীতিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন।