তিন কার্যদিবস পর শেয়ারবাজারে সূচকের উত্থান হলেও লেনদেন কমেছে
মাসুদ মিয়া: [১]দেশের শেয়ারবাজার টানা তিন কার্যদিবস সূচকের পতনের পর গতকাল মঙ্গলবার উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাক স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হলেও লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৭২ কোটি টাকা। গতকাল লেনদেন কমলেও মূল্যসূচক বাড়াকে বেশ ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। [২]তারা বলছেন, লেনদেন কম হলেও দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। এর অর্থ হলো বাজারে বীক্রির চাপ কমেছে। এটা বাজারের জন্য ইতিবাচক। তারা বলছেন, নানা কারণে শেয়ারবাজারের বীনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ও শঙ্কা দেখা দেয়। যার প্রেক্ষিতে বাজারে অব্যাহত বীক্রির চাপ আসে। এতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের টানা দরপতনের সঙ্গে কমে মূল্যসূচক। টানা দরপতনে অনেক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম অনেক কমে গেছে। বড় ধরনের অঘটন না ঘটলে এখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো স্বাভাবীক বীষয়।
[৩]গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে, যা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে বীমা খাতের ৪৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বীপরীতে কোনো বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম কমেনি। আর সব খাত মিলে ১২৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বীপরীতে দাম কমেছে ১৮টির এবং ১৪১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
[৪]অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৪৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৫৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৭২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪২৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৫৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
বাজারের এই পরিস্থিতি সম্পর্কে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, শেয়ারবাজারের ধর্মই হলো উত্থান-পতন। দাম বাড়লে যেমন একসময় দাম কমবে, তেমনি দাম কমার পর আবার বাড়বে- এটাই নিয়ম। গত কয়েকদিনের টানা দরপতনে অনেক কোম্পানির শেয়ার দাম বেশ কমে গেছে। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো স্বাভাবীক বীষয়। [৫] লেনদেন খুব বেশি হয়নি, এরপরও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। এর অর্থ হলো বাজারে বীক্রির চাপ কম। এটা ভালো লক্ষণ। তবে এই পরিস্থিতি কতদিন থাকে এখন সেটাই দেখার বীষয়। লেনদেন কমলেও কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার মোটা অঙ্কের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে সি পার্ল বীচ রিসোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ২২ কোটি ৬১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের ১৬ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৫ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, দেশবন্ধু পলিমার, এমারেল্ড অয়েল, ফু-ওয়াং ফুড, সোনালী আঁশ এবং জেমিনি সি ফুড।
[৬]অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বীক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৯টির দাম বেড়েছে। বীপরীতে দাম কমেছে ২২টির এবং ৩৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।