
বাজারদর বাড়লে এখন আর অবাক হই না
ওয়াসি মাহিন
ডিমের ডজন ১৬০ টাকা হওয়া অস্বাভাবিক মনে হয়না। এটাও হওয়া উচিত। আমার মনে হয়না দেশে বছরে দুই ঈদ বাদে মাংস কিনতে পারে এরকম লোকের সংখ্যা বেড়েছে। মাংসের চাহিদা মেটানোর উত্তম পন্থা এখন হাফ প্লেট কাচ্চি। যেহেতু আমিষের প্রধান উৎসগুলির দামে আগুন, খুব স্বাভাবিক ভাবেই সস্তা বিকল্প ডিমের দিকেই ঝুকবে ভোক্তাদের বিশাল একটা অংশ। আর এজন্যই এই সস্তা উৎস আর সস্তা নেই। সামান্য কয়েক প্রকারের সবজি কিনলেই চোখের পলকে একটি ৫০০ টাকার নোট ভ্যানিসের যাদু দেখানো যায়। মাছের বাজারে ভাগা দেয়া কাচকি, ছোট চিঙড়ির উপরেও ডিমের মত প্রেশার পড়তেছে।
যাদের আয় একটা নির্দিষ্ট গন্ডির সীমায় সাজা খাটছে, তাদের জন্য এখন জীবন সংগ্রাম আরো কঠিন। চ্যালেঞ্জগুলি আরো ট্রিকি। আয় সীমিত। কিন্তু খরচের খাতের অভাব নেই। যদি কারো ফ্যামিলিতে কেউ অসুস্থ হয় তবে তার মত অভাগা কমই আছে।
বাংলাদেশের প্রধান ও সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে জিনিসটি দরকার সেটা হল, খাদ্য নিরাপত্তা ও ন্যায্য বাজার ব্যবস্থা। এই ইস্যুগুলি নিয়ে মনে হয়না ২০ টার কম লেখা লিখেছি। বিভিন্ন ধারনাগুলি শেয়ার করেছি।
কিছুদিন আগেও একটা লেখায় বললাম, চিনি শিল্প কর্পোরেশনের চিনি যেটা বিক্রি মূল্য ১১২/- টাকা, সেটাকেই আপনি নতুন মোড়কে একজন ডিলার হয়ে ১৫৫/- টাকায় বিক্রি করতে পারেন না। চা খাবার জন্য সামান্য চিনি কেনাও এখন সাধ্যের বাহিরে নিয়ে যাচ্ছে কারা? চিনি শিল্প কর্পোরেশনের চিনি। রাষ্ট্রের চিনি। সেটাই আপনি ডিলার হয়ে বাজার মূল্যের ৩০%-৪০% বেশি দামে বিক্রি করছেন। প্রভাব খাটিয়ে মার্কেট থেকে সরকারি চিনি সরিয়ে ফেলছেন। কি দারুন অব্যবস্থাপনা তাইনা? আসলে এটাই ব্যবস্থাপনা।
লোন করে অল্প দামে একটু জমি কিনেছিলাম। দারুন উৎফুল্ল ছিলাম যে অনলাইনে মাত্র ১১৭০ টাকায় নামজারি করতে পারব। প্রথমবার আবেদন নামঞ্জুর। দ্বিতীয়বার আবেদন নামঞ্জুর। কারন, আমাকে তারা হাজির হতে বলেছে আমি হাজির হইনি, আমাকে বিভিন্ন জিনিস দিতে বলছে আমি দেইনি? অথচ আমি প্রতিদিন অনলাইনে চেক করছি হাজিরার দিন কবে দিবে। কোন প্রকার যোগাযোগ না করেই তারা নামঞ্জুর করে। পরে সেটাকেই দালাল দিয়ে ১৮ হাজার টাকা খরচ করে করতে হল। এগুলা জীবন বাস্তবতা।
বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য কার্যকর পরিকল্পনা আর সেটার প্রয়োগ না করেই এক শ্রেণি এই চ্যালেঞ্জকে সুযোগ হিসাবে কাজে লাগিয়েছে। ব্যাক্তি সম্পদ বৃদ্ধির কাজে। দেশে এবং বিদেশে।
দেশের বর্তমান ব্যংকগুলির অবস্থা ভাল হওয়া না সত্তে¡ও একের পর এক ব্যংকের অনুমোদন দেয়া হল। এসব ব্যংক দিয়েও দেশের চাহিদা নে মেটায় ডিজিটাল ব্যংকের অনুমোদন দেয়া হল। এমনিতেই ব্যাড লোনের ভারে পুরো অর্থনীতির বিশাল ফান্ড স্টাক হয়ে আছে, সেখানে এভাবে ব্যাংকের সংখ্যায় বিস্তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নকে আমার কাছে শুধু মনে হয়, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়, কার্যকর পরিকল্পনার স্থলে চ্যালেঞ্জকে ব্যক্তি/গোষ্ঠির জন্য সম্ভাবনার কার্যকর পরিকল্পনা।
ধরুন আপনি ব্যবসায়ী। আপনি জানেন আপনার চলতি মূলধন বা ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বছরে যতবার রিসাইকেল করবেন আপনার ব্যবসা তত ভাল। প্রতিবার রিসাইকেলে আপনার আয় বাড়বে। মানি যত হাত ঘুরবে ইকোনমির জন্য তত লাভ।
দেশের ব্যাড লোন বা কু-ঋণের এমাউন্ট ১.৫৬ লক্ষ কোটি। এই হিসাবটা সঠিক নয়। সত্যিকার অর্থে লোনগুলিকে যেভাবে ম্যানুপুলেশন করে ঠিক রাখা হয়েছে তা ক্লাসিফায়েড এমাউন্টের থেকে ৫-১০ গুন বেশি। যদি ওভার ডিও হিসাব করা হয় তাহলে খুব কম সংখ্যক লোন আছে যেগুলাতে কোন ওভারডিউ নেই। কিছু ব্যংকের ক্লাসিফায়েবল লোন ৭০-৮০% অতিক্রম করছে।
ব্যবসার জন্য ফান্ডের মুল যোগানদাতা সাধারণ মানুষের ডিপোজিট। আর এই ডিপোজিট ব্যাংকের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ফান্ডিং হয়। জনগণের আমানত আকৃষ্ট করবার জন্য প্রচুর প্রচেষ্টা চলছে। প্রতিযোগিতা চলছে। কিন্তু ঋণ দেয়ার সময় শুধু প্রফিটের এরপর পৃষ্ঠা ২, সারি ১
