সংসদে নসরুল হামিদ এলপিজির মূল্য কমানোর সুযোগ নেই
মো. আখতারুজ্জামান : [১] বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, মার্কিন ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি ও দেশের বাজারে আমাদানি নির্ভরের কারণে এলপিজির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজির মূল্য না কমলে দেশের বাজারে এলপিজির মূল্য কমানোর সুযোগ নেই।
[২] বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে চট্টগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সংসদে এ তথ্য জানান।স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্বে মন্ত্রীর প্রশ্ন-উত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
[৩] মন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সারাদেশে এলপি গ্যাস আরও সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য করার জন্য কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর মাতারবাড়ী এলাকায় বৃহদাকার এলপিজি টার্মিনাল এবং চট্টগ্রামের লতিফপুর মৌজায় বটলিং প্লান্ট নির্মাণের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।
[৪] তিনি বলেন, গণশুনানিতে গৃহীত সিদ্ধান্ত মতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন কর্তৃক প্রতি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজি’র মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশে বেসরকারি এলপিজি’র মূল্য সমন্বয় করা হয়। বেসরকারি এলপিজি’র মূল্যে সৌদি আরামকো কর্তৃক প্রতি মাসে ঘোষণা করা হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে জুন এবং জুলাই ২০২৩ মাসে এলপিজির দাম কম হওয়ায় কমিশন কর্তৃক এলপিজির মূল্য হ্রাস করা হয়। এ ছাড়া আগস্ট ২০২৩ থেকে অক্টোবর ২০২৩ পর্যন্ত প্রতিমাসেই বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের বাজারেও এলপিজির মূল্য সে অনুযায়ী সমন্বয় করা হয়েছে।
[৫] ল²ীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের অপর এক প্রশ্নের মন্ত্রী সংসদে জানান ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬টি গ্যাসক‚পের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ক‚পগুলো হলো: শ্রীকাইল ইস্ট-১, জকিগঞ্জ-১, সিলেট-৯, টবগী, ভোলা নর্থ-২ ও ইলিশা-১। এরমধ্যে জকিগঞ্জ ও ইলিশা দেশের ২৮তম ও ২৯ তম গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
[৬] শ্রীকাইল ইস্ট-১ ও সিলেট-৯ কুপদ্বয় থেকে দৈনিক গড়ে মোট ১২ (৭.৫ +৪.৫) মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রসেস প্ল্যাান্ট ও পাইপলাইন স্থাপনের পর টবগী-১ এবং জকিগঞ্জ, ভোলা নর্থ ও লশা গ্যাসক্ষেত্র হতে গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে। তবে পাইপলাইন স্থাপনের পূর্বে ভোলা জেলায় অবস্থিত গ্যাসক‚পসমূহ থেকে সিএনজি আকারে গ্যাস সরবরাহ করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। খনন কাজ সমাপনান্তে গ্যাস ফ্লো পরীক্ষণে নি¤œরূপ গ্যাসের পরিমাণ নিশ্চিত করা হয়েছে।ক‚পের নাম পরিমাণ জকিগঞ্জ-১ টবগী ২০ ভোলা নর্থ-২ ইলিশা-১।
[৭] ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, উৎপাদন বণ্টন চুক্তি (পিএসসি)’র আওতায় বর্তমানে অফশোরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কাজে ২টি আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি (আইওসি) এবং অনশোরে ২টি আইওসি তেল-গ্যাস উত্তোলনে নিয়োজিত পিএসসি’র আওতায় কর্মরত আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিগুলোর নাম ও বøকসমূহ হচ্ছে১। শেভরন: বøক-এ ২ (বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র, হবিগঞ্জ), বøক-১৩ (মৌলভীবাজার গ্যাসক্ষেত্র, মৌলভীবাজার) এবং বøক-১৪ (জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্র, সিলেট)২। তাল্লো: বøক-৯ (বাজুরা গ্যাসক্ষেত্র, কুমিল্লা)
[৮] মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি নিজস্ব বিনিয়োগ ও ঝুঁকি নিয়ে পিএসসি’র আওতায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। পিএসসি স্বাক্ষরের পর চুক্তি অনুযায়ী সব অনুসন্ধান কার্যক্রম শেষে তেল-গ্যাস পাওয়া না গেলে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিসমূহ বøকগুলো ছেড়ে দেবে এবং তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত পাবে না। পক্ষান্তরে, অনুসন্ধান কার্যক্রম শেষে তেল-গ্যাস পাওয়া গেলে জাইওসি তাদের বিনিয়োগ কৃত অর্থ গ্যাস বিক্রির অর্থ হতে পিএসসির শর্ত মোতাবেক প্রাপ্য হবে; অতঃপর লভ্যাংশ সরকার/পেট্রোবাংলা ও আইওসি’র মধ্যে বণ্টিত হয়। পিএসসি’র শর্ত অনুযাযী আইওসিসমূহ কর্তৃক সাইসমিক জরিপ ও ক‚প খননের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর বিপরীতে দাখিলকৃত ব্যাংক গ্যারান্টি পেট্রোবাংলার কাছে গচ্ছিত থাকে। প্রতিশ্রæত বাধ্যবাধকতা প্রতিপালন না করা হলে সংশিষ্ট বাধ্যবাধকতার বিপরীতে তাদের দাখিলকৃত ব্যাংক গ্যারান্টি বাজেয়াপ্ত করার বিধান রয়েছে।