কারখানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুর-আশুলিয়ায় টানা ৮ দিন ধরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
হাসিব খান, শামীম আহম্মেদ, গাজীপুর প্রতিনিধি : [১] বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুর-আশুলিয়ায় টানা ৮ দিনের ধরে বিক্ষোভ করছে শ্রমিকরা। মঙ্গলবার এ আন্দোলন ভয়াবহ পরিস্থিতিতি রূপ নেয়। এ দিন সকাল থেকেই আন্দোলনরত শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান করে।
[২] সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের আশুলিয়ার ইউনিক, শিমুলতলা, জামগড়া, নরসিংহপুর, নিশ্চিন্তপুর ও ঘোষবাগ এলাকা ঘুরে দেখা যায় থেমে থেমে বিক্ষোভ করছে শ্রমিকরা। এ ঘটনায় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোড়ে। ফলে সড়কের পাশের সমস্ত দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি থমথমে হওয়ায় দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।
[৩] এ সময় তারা কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক বাজার এলাকায় অবস্থিত পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা করেছে। উত্তেজিত শ্রমিকেরা ফাঁড়ির ফটক, কার্যালয়ের কাচ ও সাইনবোর্ড ভাঙচুর করেছেন। এছাড়াও সফিপুরে জেলা পুলিশের একটি ট্রাফিক বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত শ্রমিকরা। পাশাপাশি তারা হাসপাতাল, দোকানপাটে ভাঙচুর কারখানায় অগ্নিসংযোগ এবং সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
[৪] এছাড়া কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রায় ওয়ালটন প্লাজার একটি শোরুমে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এতে পুরো ওয়ালটন প্লাজাটি আগুনে পুড়ে যায়। অগ্নিকাÐের ঘটনায় এ শোরুমেট ভিতরে যত আসবাবপত্র ছিল সবকিছু পুড়ে যায়। আগুন লাগার প্রায় ৩০ মিনিট পর কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
[৫] অগ্নিকাÐের ঘটনার পরপরই কিন্তু ওয়ালটনের শ্রমিকরা লাঠি হাতে সেখানে অবস্থান নেয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা যেন আর কোন ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য তারা সেখানে অবস্থান নেয়।
[৬] এদিকে এর আগে, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুরে পুলিশের একটি ট্রাফিক বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে পুলিশের ওই ট্রাফিক বক্সটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এ সময় শ্রমিকরা তালহা মেডিকেল নামে একটি হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর করে।
[৭] মঙ্গলবার সকালে কোনাবাড়ি এলাকায় দেখা গেছে, কোনাবাড়ী এলাকার সবচেয়ে বড় কারখানা তুসুকা গ্রæপের প্রধান ফটকে বড় একটি ব্যানার ঝুলছে। তাতে লেখা রয়েছে অনিবার্য কারণবশত কারখানার সকল কার্যক্রম আগামী ২ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। একই এলাকার এম এম নেটওয়ার্ক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শুধু মঙ্গলবারের জন্য। এছাড়া আরো বেশ কয়েকটি কারখানার সামনে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখা গেছে।
[৮] ভোগড়া এলাকার স্টাইলিশ গার্মেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাউদ্দিন চৌধুরী সময় জানান, শ্রমিক আন্দোলনের কারণে কারখানার সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই খুলে দেয়া হবে।
[৯] আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল ইউনিক, শিমুলতলা, জামগড়া, ছয়তলা নরসিংহপুরসহ বিভিন্ন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি সামনে শ্রমিকের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
[১০] সর্বনি¤œ মজুরি ২৩ হাজার টাকার দাবিতে তৃতীয় দিনে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহা -সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে কয়েক হাজার শ্রমিক। সড়ক থেকে সড়িয়ে দিতে শ্রমিকদের উপর টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে করে শ্রমিকদের সাথে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশের রাবার বুলেটে বেশ কিছু শ্রমিক আহত হয়েছে।