মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন জাতি আওয়ামী লীগের কাছে যা চায়, তাই পাবে : প্রধানমন্ত্রী
এস.ইসলাম জয় : [১] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে। জাতি আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে যা চায়, তা-ই পাবে।
[২] শনিবার মেট্রেরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধনের পর ট্রেনে চেপে মতিঝিল যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন।
[৩] তিনি বলেন, এতটুকু বলতে পারি, পথ হারায়নি বাংলাদেশ। আমরা একের পর এক বড় বড় স্বপ্ন পূরণ করছি। একটা উন্নত দেশ যা যা পেয়েছে, আমাদের দেশের মানুষও সবই পাবে। আমরা জাতিকে শিক্ষা দীক্ষা জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এখন আমাদের স্বপ্ন স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট সোসাইটি। এটাই আমার বড় আকাঙ্ক্ষা। বাংলাদেশ কারও কাছে হাত পেতে চলবে না। নিজের পায়ে দাঁড়াবে, বিজয়ী জাতি হিসেবে সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবো।
[৪] প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, অগ্নিসন্ত্রাস করে তাদেরকে আমরা প্রত্যাখ্যান করি। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। দেশের মানুষের কাছে আমার একটাই চাওয়া, সবাই যেন স্বাধীন দেশের আত্মমর্যাদা নিয়ে চলে। সন্ত্রাস, অগ্নিসন্ত্রাসী ও দুর্বৃত্তপরায়ণদের প্রত্যাখ্যান করে।
[৫] তিনি বলেন, আমার বাবা বাঙালি জাতির একটা উন্নত সমৃদ্ধ জীবন দেবেন বলেই এ দেশকে স্বাধীন করেছেন। আমার একটাই প্রত্যয়, আমি বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। আমার আমিত্ব বলে কিছু নেই আমি আমাকে উৎসর্গ করেছি, এদেশের মানুষের কল্যাণে। মানুষ যখন শান্তি পাবে, তখন আমার বাবাও শান্তি পাবে, তিনি খুশি হবেন, তিনি নিশ্চয় সেটা দেখছেন।
[৬] মেট্রোরেল নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্টদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এই মেট্রোরেলের কাজে নিয়োজিত ছিল আমি তাদেরকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। তাদের পরিশ্রমের জন্য ঢাকাবাসীর কষ্ট লাঘব হবে। এটি উন্নত প্রযুক্তির ও পরিবেশবান্ধব। ফলে সময় বাঁচবে, যানজট কমবে।
[৭] এর আগে, দুপুর আড়াইটায় মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে প্রথমে ট্রেনের স্বয়ংক্রিয় টিকিট (অস্থায়ী পাস কার্ড) নেন। এরপর কার্ড পাঞ্চ করে প্রধানমন্ত্রী ট্রেনের লাউঞ্জে প্রবেশ করেন। সেখানে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। ট্রেন চলাচলের সংকেত পতাকা নেড়ে ট্রেন চলার সংকেত দেন। পরে ট্রেনেই চড়ে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিলের উদ্দেশে রওনা হন।
[৮] মেট্রোরেল থেকে নেমে মতিঝিল স্টেশনে আরেকটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বিকেলে আরামবাগে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় জনসভায় যোগ দেবেন তিনি।
[৯] এ সময় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন, মুখ্য সচিব তোফাজ্জাল হোসেন মিয়া, শেখ হেলাল এমপি, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিনুল্লাহ নুরী, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এম এন এ সিদ্দিকসহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ও বিদেশি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
[১১] ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক আজ প্রবাসী কল্যাণ ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, প্রাথমিকভাবে আগারগাঁও-মতিঝিল অংশে তিনটি স্টেশন— ফার্মগেট, সচিবালয় ও মতিঝিলে মেট্রোরেল চার ঘণ্টা চলবে। বাকি স্টেশনগুলো পর্যায়ক্রমে খুলে দেওয়া হবে।
[১২] এম এ এন সিদ্দিক বলেন, তিনি এমআরটি নর্দার্ন রুটের নির্মাণকাজও উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঢাকার আগারগাঁও থেকে মতিঝিল যেতে পারবেন যাত্রীরা। ঢাকা মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে সাতটি স্টেশন রয়েছে। সেগুলো হলো বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, টিএসসি, প্রেসক্লাব ও মতিঝিল।
[১৩] মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ চালু হলে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যাত্রীরা মাত্র ৩৮ মিনিটে যাতায়াত করতে পারবেন। দেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকায়।
[১৪] জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) প্রকল্পটিকে সহায়তা করার জন্য ১৯ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকার অবশিষ্ট অর্থ প্রদান করেছে।