ডিম, মাছ, মুরগি, পেঁয়াজ আলু ও শীতকালীন সবজি দাম কমেছে
মাসুদ মিয়া: [১] রাজধানীসহ সারাদেশে আগাম শীতকালীন সবজিতে ভরপুর থাকায় কিছুটা স্বস্তি ফিরছে সবজির বাজারগুলোতে। দুই সপ্তাহের তুলনায় প্রায় অর্ধেক কমেছে সবজির দাম পাশাপাশি কমেছে ডিম, আলু পেঁয়াজসহ কিছু পণ্যের দাম। গতকাল রোববার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটা জানা গেছে। এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, মৌসুম শেষে বাজারে আলুর সরবরাহ কম। ভারত থেকে আলু আমদানি হচ্ছে। তবে যে পরিমাণে আলু এসেছে, তা চাহিদার তুলনায় খুব সীমিত। দাম কিছুটা কমলেও নাগালের মধ্যে আসেনি। আর ডিম আমদানি কারণে দাম কিছুটা কমছে। বর্তমানে রাজধানীর বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। যা গত এক সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি কমেছে ২০ টাকা। তবে অন্যসময় বছরজুড়ে আলুর দাম থাকে ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ আলুর দাম কেজিতে ২০ টাকা কমলেও তা এখনও স্বাভাবিক দামের আসেনি।
রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলোতে লম্বা বেগুন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা, গোল বেগুন ৫০-৭০ টাকা, পেঁপে ৩০-৩৫ টাকা, করলা ৫০-৬০ টাকা, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০-৫০ টাকা মান ও সাইজভেদে লাউ ৫০-৬০ টাকা, জালি ৪০-৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০-৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। অধিকাংশ সবজি দুই তিন সপ্তাহ আগে ৪০-৫০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল।
এছাড়াও নতুন সবজি হিসেবে ফুলকপি মাঝারি সাইজের ৪০-৫০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে এসব সবজির দাম ২০-৩০ টাকা বেশি ছিল। কমেছে আলুর দাম। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা। তবে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা।
এদিকে পুঁই শাক ৩০ টাকা, পাট শাক আটি ১০-১৫ টাকা, লাল শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ২০-২৫ টাকা, মুলা শাক ১০-১৫ টাকা, সরিষা শাক ১০ টাকা আটি বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে কেজিতে ২০-৩০ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ১৫০-১৬০ টাকা।
অপরদিকে মাছ ও মাংসের দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৮০-১৯০ টাকা, সোনালি ২৮০-৩০০ টাকা। রাজধানীর কিছু বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা। তবে অধিকাংশ বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের দাম এখন প্রতি কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। অন্য মাছের মধ্যে মাঝারি ও বড় আকারের চাষের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছের দাম প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এছাড়াও পাবদা, টেংরা, কই, বোয়াল, চিতল, আইড় ও ইলিশ মাছের দামও কমেছে।
অন্যদিকে, বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহ ভালো থাকায় অন্যান্য মাছের দাম কিছুটা কমেছে। মালিবাগ বাজারের মাছ বিক্রেতা এনামুল হক বলেন, গত শুক্রবার থেকে ইলিশ মাছ ধরা শুরু হয়েছে। ইলিশ মাছের সরবরাহ ভালো, দামও কিছুটা কম। যে কারণে অন্যান্য পদের মাছের উপর চাপ কম। ফলে সেগুলোর দাম ২০ থেকে ৫০ টাকা কেজিপ্রতি কমেছে।
এদিকে প্রায় ২ মাস আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে খুচরা পর্যায়ে আলুর দর ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু বাজারে এ দর কার্যকর হয়নি।
ভারত থেকে ডিমও আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তারও কিছুটা প্রভাব বাজারে রয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে বেশ কমেছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। এ সময়ের ব্যবধানে প্রতিটি ডিমের দাম প্রায় এক টাকা কমেছে।
পাইকারি ব্যবসায়ী ও খামারিরা জানিয়েছেন, আগের তুলনায় উৎপাদন বাড়ায় বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। অন্যদিকে, অবরোধের কারণে চাহিদায় কিছুটা টান পড়েছে। এতে স্বাভাবিকভাবেই পাইকারি বাজারে ডিমের দাম কমে এসেছে।
খুচরা বাজারে এখন প্রতি পিস ডিম ১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতি হালি ৪৮ টাকা। এ এক হালি ডিম দুই সপ্তাহ আগে ৫৫ টাকার বিক্রি হয়েছে। এদিকে, বড় বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা দরে।
তবে বাজারে আবারও উত্তাপ শুরু হয়েছে চিনির দামের কারণে। ৮ থেকে ১০ দিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে পণ্যটির দাম। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, ডিলার পর্যায়ে (পাইকারি) প্রতি কেজি চিনির দাম রাখা হচ্ছে ১৩৬-১৩৮ টাকা। খুচরায় প্রতি কেজি ১৪০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।