আমিনুল ইসলাম : [১] অনেক ব্যাংকে তথ্য গোপন করে বা ভুয়া এনআইডি দিয়ে ঋণ করা হয়েছে। অনেক সময় একই সম্পদ দেখিয়ে কয়েকবার ঋণ নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। আর এসব ভুয়া ঋণের কারণে দেশের ব্যাংক খাতের অবস্থা এখন নাজেহাল।
[২] তাই যথাযথ যাচাই ছাড়া নতুন ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়ার দাবি জানিয়েছে সরকারের ছয় সংস্থা। সংস্থাগুলোর পরামর্শে বলা হয়েছে, গ্রাহকের একক মোবাইল নম্বর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা। একক মোবাইল নম্বর ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে কেউ নতুন করে ভুয়া ঋণ নিতে পারবে না।
[৩] রোববার (১২ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠককালে এসব পরামর্শ দেয় সংস্থাগুলো। ছয় সংস্থার মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বীমা নিয়ন্ত্রক ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ), মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ), রেজিস্টার অব জয়েন স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্ম (আরজেএসসি), ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) এবং সমবায় অধিদপ্তর।
[৪] গত এপ্রিল-জুন সময়ে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। এতে জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। যা ব্যাংক খাতের বিতরণ করা মোট ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। গত মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা।
[৫] বৈঠক সূত্র জানায়, আর্থিক খাতের অনিয়ম সব সময় একক সংস্থার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়ে উঠে না। এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর যৌথভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ। গ্রাহক একটি সংস্থাকে ফাঁকি দিলেও অন্য সংস্থা সেই অনিয়ম চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে পারবে। যৌথ কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি, খেলাপি, অর্থপাচার, আর্থিক কেলেঙ্কারি ইত্যাদি কমে আসবে। এতে অর্থনীতি বেগবান হবে, সুশাসন ফিরবে আর্থিক খাতে।
[৬] বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, এখনো সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশের অর্থনীতি। এর অন্যতম কারণ আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতার। অর্থনীতিকে আরও বেগবান করতে সংস্থাগুলোকে সমন্বিত করার সময় এসেছে। কারণ কোনো একক সংস্থার পক্ষে পুরো অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।