![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)
মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছে পুরো এক ব্যাটালিয়ন সৈন্যের আত্মসমর্পণের দাবি
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/uploads/2023/11/mynmar-400x225.jpg)
অর্থনীতি ডেস্ক : [১] চীনা সীমান্তের কাছে অবস্থিত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর একটি পুরো ব্যাটালিয়ন তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে বলে দাবি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের।
[২] মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের মুখপাত্র লি কিয়ার ওয়াই গত বুধবার জানান, উত্তর-পূর্ব শান রাজ্যের পদাতিক ব্যাটালিয়নের ১২৭ জন সৈন্য তাদের পরিবারের মোট ১৩৪ জন সদস্যসহ আত্মসমর্পণ করেছে।
[৩] মুখপাত্র বলেন, তাদের জোট খুব দ্রুত এ অঞ্চলের প্রধান শহর লাউকাইং দখল করার আশা করছে। গত মাসে সশস্ত্র এ গোষ্ঠী মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে আকষ্মিক হামলা চালায়।
[৪] ২০২১ সালে এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত অং সান সুচির সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এরপর থেকে শুরু হওয়া ব্যাপক সংঘাতের মধ্যে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর এটিই সবচেয়ে বড় আত্মসমর্পণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে আত্মসমর্পণের ব্যাপারে সামরিক জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কিছু জানানো হয়নি। [৫] জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি, দ্য মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি ও তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি নিজেদের থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স হিসেবে ঘোষণা করেছে। গত ২৭ অক্টোবর সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে তাদের যৌথ অভিযানের দুই সপ্তাহ পর এ আত্মসমর্পণের দাবি করল জোটটি। [৬] জোটটি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড় বিজয়ের দাবি করেছে। সামরিক সরকার গত ২ নভেম্বর বিরল এক স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছিল যে তারা তিনটি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। যার মধ্যে চীনের সাথে বাণিজ্যের প্রধান সীমান্ত সড়কটিও রয়েছে।
[৭] শান রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠীর এ আক্রমণকে সেনাবাহিনীর জন্য একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হয়েছিল। ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পরে প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্রপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) দেশব্যাপী বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াই করছে সেনাবাহিনী। সামরিক সরকার বিরোধী দেশের অন্য গোষ্ঠীগুলোও সুসংগঠিত জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সাথে যোগ দিয়েছে।
[৮] গত সোমবার মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের পাঁচটি শহরে আরাকান আর্মি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আকস্মিক আক্রমণ শুরু করলে আরেকবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে সামরিক সরকার। এর আগে সামরিক সরকার ও আরাকান আর্মির মধ্যে রাজ্যে এক বছরব্যাপী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল।
[৯] লি কিয়ার ওয়াই গত বুধবার বলেছিলেন, সেনাবাহিনীর কমান্ডারসহ আত্মসমর্পণকারী প্রত্যেক সৈন্যকে দশ লাখ কিয়াট (৪৮০ ডলার) পুরস্কার দেওয়ার হয়েছে। সেই সঙ্গে পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের জন্য এক লাখ কিয়াট (৪৮ ডলার) প্রদান করা হয়েছে।
[১০] লি কিয়ার বলেন, আমরা আহত সৈন্যদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। আমরা তাদের প্রত্যেককে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে নিরাপদে পাঠিয়ে দিয়েছি। তিনি উল্লেখ করেন, তাদের এই জোট খুব শীঘ্রই লাউকাইং দখলের জন্য অভিযানের পরিকল্পনা করছে।
[১১] লাউকাইং সাইবারস্ক্যামের মতো বড় বড় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য পরিচিত। বলা হয়ে থাকে, স্থানীয় সামরিক কর্তৃপক্ষের সহায়তায় চীনের কিছু বিনিয়োগকারী এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স ঘোষণা করেছিল যে তাদের ২৭ অক্টোবরের হামলার অন্যতম একটি লক্ষ্য ছিল এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমন করা।
[১২] লি কিয়ার বলেছিলেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করে তাদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবে। এদিকে, শান রাজ্যে যে সৈন্যরা আত্মসমর্পণ করেছিল তারা জোট গোষ্ঠীর কাছে তাদের অস্ত্র জমা দেয়নি। এর আগে ৩০ অক্টোবর কাছেই কুনলং শহরে অবস্থিত আরেকটি পদাতিক ব্যাটালিয়নের ৪১ জন সৈন্য জোটটির কাছে আত্মসমর্পণ করে।
[১৩] গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীগুলো জানায়, এ নিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট ২০০ জনেরও বেশি সেনা ও পুলিশ জোটের দলগুলোর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
[১৪] জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী ও স্বাধীন স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, গত মাসে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে কারেন, কায়াহ, রাখাইন, চিন রাজ্য এবং সাগাইং অঞ্চলে সৈন্য ও পুলিশ আত্মসমর্পণ করেছে। সূত্র : টিবিএস
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)