সোহেল রহমান : [১] বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) বলেছে, গত দুবার জাতীয় নির্বাচনের সময় বিদেশি সম্পৃক্ততা তেমন ছিল না। এবার আছে। এ বছর অন্য দুবারের মতো নির্বাচন হবে না। অন্যদিকে নির্বাচন নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে। নির্বাচনের পরও যে শান্তিতে থাকব, সে কথাও বলা যাচ্ছে না।
[২] সংস্থার মতে, এবারই প্রথমবারের মতো রাজনীতি ও অর্থনীতিÑ দুই বিষয়েই একই সঙ্গে অনিশ্চয়তা আছে। দেশের রাজনীতি ঠিক না থাকলে অর্থনীতি ঠিক থাকবে না। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা অর্থনীতির অনিশ্চয়তাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
[৩] মঙ্গলবার পিআরআই’র বনানীর কার্যালয়ে অর্থনীতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর এসব কথা বলেন।
[৪] আহসান এইচ মনসুর বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি, রিজার্ভ কমে যাওয়া, বিনিময় হারÑএসব নিয়ে চাপে আছে অর্থনীতি। আইএমএফ এসব বিষয়ে সংস্কার করতে বলেছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে এসব সংস্কার করা সম্ভব নয়। তাই মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের আশপাশেই থাকবে। বিনিময় হার কোথায় ঠেকবে Ñতা বলা যাচ্ছে না। নির্বাচনের পরেও যে এসব সংস্কার হবে, সেই দিক-নির্দেশনাও রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছে পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে বড় ধরনের সংস্কার করতেই হবে।
[৫] তিনি বলেন, আইএমএফ-এর দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পেতে বড় কোনো সমস্যা হবে না, যদি বৃহৎ শক্তিধর দেশ বাধা না দেয়।
[৬] এ বিষয়ে একটি উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, আমি আইএমএফের মিশনপ্রধান হিসেবে সুদান সফরে গিয়েছিলাম। সুদান তখন আইএমএফ-এর ঋণ কর্মসূচির মধ্যে ছিল। তারা ঋণ পরিশোধ করতে পারছিল না। তখন আমরা বলেছি, তাদের ঋণের কিস্তি আপাতত পরিশোধ করতে হবে না। শুধু সংস্কার করলেই হবে। এমন প্রস্তাব আইএমএফ-এর বোর্ডে ওঠার আগের রাতে জি-১০ এই প্রস্তাবে আপত্তি জানায়। প্রস্তাব পাস হয়নি।
[৭] তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক সংস্কারের পাশাপাশি এবার আরও কিছু নতুন ইস্যু এসেছে। যেমন শ্রম ইস্যু বড় হয়ে গেছে। এটির এখনো কোনো সুরাহা হয়নি। শ্রম পরিবেশ ঠিক করতেই হবে। মানবাধিকার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। এসব বিষয়ে জবাবদিহি বাড়াতে হবে। কিন্তু অতীত রেকর্ড ভালো না। ভালো করতে হবে। অর্থনীতির চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি অর্থনীতি বাইরের নানা চ্যালেঞ্জ সামনে এসেছে, যা অর্থনীতিকে আরও চাপে ফেলছে।