সোহেল রহমান : [১] চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি এবং ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বাড়লেও অর্থছাড় কমেছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষমতার অভাব, বাজেট সহায়তা প্রাপ্তি ও আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলমান পরিস্থিতির কারণে অর্থছাড় কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
[২] অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা যায়, অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ৪৬২ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঋণ ৩৩৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার এবং অনুদান ২৪ কোটি ৩২ লাখ ডলার। আলোচ্য সময়ে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি বেড়েছে ৭৭৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে প্রতিশ্রুতির পরিমাণ ছিল ৪১ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। এর মধ্যে ঋণ ছিল ৩০ কোটি ও অনুদান ছিল ১১ কোটি ৩৬ লাখ ডলার।
[৩] এদিকে প্রতিশ্রুতির বিপরীতে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) উন্নয়ন সহযোগীরা ছাড় করেছে ১৬২ কোটি ৬১ লাখ ডলার। এর মধ্যে জাপান ছাড় করেছে সর্বোচ্চ ৫১ কোটি ২৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার। বিশ্বব্যাংক ও এডিবি’র কাছ থেকে পাওয়া গেছে যথাক্রমে ৩৩ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং ২৯ কোটি ৪২ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এছাড়া, রাশিয়া ছাড় করেছে ২৬ কোটি ডলার।
[৪] গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড়ের পরিমাণ ছিল ১৯৭ কোটি ৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের চার মাসে অর্থছাড় কমেছে ৩৪ কোটি ৯৯ লাখ ডলার। শতকরা হিসাবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অর্থছাড় কমেছে ১৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
[৫] সূত্রমতে, অন্যদিকে একই সময়ে দেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ৫২ শতাংশ বেড়েছে। কয়েকটি বড় প্রকল্পের ঋণের গ্রেস পিরিয়ডের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে বলে জানা যায়। গত চার মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে ১১০ কোটি ১৫ লাখ ডলার। এর মধ্যে সুদ ৪৬ কোটি ৭৪ লাখ ডলার ও আসল ৬৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে সুদ পরিশোধ করা হয়েছিল ১৮ কোটি ৭৭ লাখ ডলার ও আসল ছিল ৫৩ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। সে হিসাবে ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ৩৭ কোটি ৭৩ লাখ ডলার।
[৬] সূত্র জানায়, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছ থেকে প্রায় ২০০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা পেয়েছিল সরকার, এর মধ্যে কিছু বাজেট সহায়তার অর্থছাড় হয়েছিল অর্থবছরের শুরুর দিকে। কিন্তু চলতি অর্থবছরে এখনও কোনো বাজেট সহায়তা আসেনি। যদিও এডিবি, বিশ্বব্যাংক ও এআইআইবি’র কাছ থেকে বাজেট সহায়তা নেয়ার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু করেছে সরকার। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত সরকার উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ১ হাজার ১২৪ কোটি ডলার অর্থছাড় আশা করছে।